হিন্দি সিনেমা মানেই গাঁজাখুরি বলার অভ্যাস অনেকের। কিন্তু তাঁরা হয়তো জানেন না বাস্তব জীবনে আমাদের আশপাশে এমন অনেক ঘটনা ঘটে যা সিনেমার তথাকথিত কল্পনাপ্রসূত গল্পকেও ম্লান করে দিতে পারে। এমনই তার টানটান উত্তেজনা। যেমন মুম্বইয়ের জেজে হাসপাতাল থেকে কুখ্যাত দুষ্কৃতী তথা খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত হনুমান পাটিলের পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পলায়ন। পুলিশ সূত্রের খবর, বছর ৩০-এর হনুমান পাটিলের বিরুদ্ধে সম্পত্তিজনিত বিষয়কে কেন্দ্র করে এক সিডকো কর্মীকে খুনের অভিযোগ রয়েছে। তাকে ২০১৩ সালেই সেই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়। রাখা হয় মুম্বইয়ের তালোজা জেলে। সেখানেই বন্দি ছিল হনুমান।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তাকে জেজে হাসপাতালে চেকআপের জন্য আনা হয়। সেখানে হনুমান তার নজরদারিতে কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিককে অনুরোধ করে ওষুধের দোকানে যাওয়ার অনুমতি আদায় করে। ওই পুলিশ আধিকারিক ২ কনস্টেবলকে বলেন হনুমান পাটিলের সঙ্গে ওষুধের দোকানে যেতে। যাতে সে কোনওভাবে পালাতে না পারে। সেই সময়ে হনুমানের সঙ্গে ছিল তার স্ত্রী মোনালি। অভিযোগ, হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে ওষুধের দোকানে যাওয়ার বদলে ২ কনস্টেবল ও স্বামী-স্ত্রী একটি ট্যাক্সি ধরে গ্রান্ট রোডের ব্রাইটওয়ে হোটেলে হাজির হয়। ট্যাক্সিতেই হনুমানের স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতে চেয়ে কনস্টেবলদের অনুরোধ করে। হোটেলের ঘরে দুজনে ২ ঘণ্টা কাটানোর জন্য কনস্টেবলদের হাতে ১ লক্ষ টাকা করেও গুঁজে দেয় মোনালি। তারপর দুজনে হোটেলের একটি ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। ঘরের বাইরে ১ জন ও হোটেলের বাইরে ১ জন কনস্টেবল প্রহরায় থাকে। ঘণ্টা দুয়েকের পরও তারা বার না হওয়ায় অগত্যা দরজায় ধাক্কা দেন ১ কনস্টেবল। দরজা খুলে বেরিয়ে আসে মোনালি। ঘরে হনুমান পাটিল নেই। ততক্ষণে হোটেলের জানালা টপকে উধাও সে।
সব ঘটনা জেজে হাসপাতালে ফিরে জানানোর পর পুলিশ তদন্ত শুরু করে। খোঁজ শুরু হয় হনুমানের। অবশেষে গতমাসে উত্তরপ্রদেশ থেকে ফের তাকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয় পুলিশ। সামনে আসে এই রোমহর্ষক পলায়ন গাথা! অভিযুক্ত ২ কনস্টেবলকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কড়া বিভাগীয় ব্যবস্থাগ্রহণেরও আশ্বাস দিয়েছে মুম্বই পুলিশ।