National

বাবা রাম রহিমের ভক্তদের গুণ্ডাগিরি, গুলি, আগুন, পাথরবৃষ্টি, মৃত্যু

ধর্ষণ মামলায় হরিয়ানার পাঁচকুলার সিবিআই আদালতে স্বঘোষিত ধর্মগুরু বাবা রাম রহিম দোষী সাব্যস্ত হওয়ার খবর সামনে আসতেই গুণ্ডাগিরি শুরু করলেন তার ভক্তরা। পাঁচকুলায় সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সকাল থেকে যে ভক্তদের জমায়েত বিভিন্ন জায়গায় ছিল তারাই আদালতের রায়ের পর আচমকা হিংসার পথ বেছে নেন। পুলিশ ও সংবাদমাধ্যমই ছিল প্রধান টার্গেট।

সংবাদমাধ্যমের ২টি ওবি ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের মারধর করা হয়। ক্যামেরা ভেঙে দেওয়া হয়। পা ভেঙে যায় একটি ওবি চালকের। অন্যদিকে পুলিশকে লক্ষ্য করে বিভিন্ন জায়গায় পাথর বর্ষণের ঘটনা ঘটে। পাঁচকুলায় অনেক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় উন্মত্ত ভক্তরা। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় দমকলের গাড়ি। গুলি চালনার ঘটনা ঘটে। গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে অগুন্তি। আগুন লাগানো হয়েছে আয়কর দফতরের অফিসে।


অশান্তির আগুন ছড়িয়েছে পঞ্জাবেও। পঞ্জাবের দুটি রেল স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেন রাম রহিমের ভক্তরা। অনেক জায়গায় কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুঁড়ে অবস্থা আয়ত্তে আনার চেষ্টা করে পুলিশ। কিছু জায়গায় সেনা টহলও শুরু হয়। আকাশপথে হেলিকপ্টারেও নজরদারি চালায় প্রশাসন। যদিও তাতে বিশেষ সুবিধা হচ্ছেনা। নতুন নতুন জায়গায় অশান্তি ছড়াচ্ছেন ভক্তরা। ভাটিন্ডা, ফিরোজপুর, মানসাতে কার্ফু জারি করেছে প্রশাসন।

দিল্লির আনন্দবিহারে একটি ফাঁকা ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দেয় ডেরার গুণ্ডারা। দিল্লির পাঁচটি জায়গায় তাণ্ডবের ঘটনা ঘটে। দিল্লির গাজিয়াবাদে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে উত্তরপ্রদেশের নয়ডা সহ কয়েকটি জায়গায়। এদিকে দিল্লির উপ রাজ্যপাল পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন কোনও ভাবেই যেন রাজ্যের সম্পত্তি বা অন্য কোনও ক্ষতি না হয় সেদিকে কড়া নজর রাখতে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানান।


এদিকে পাঁচকুলা সহ হরিয়ানা জুড়ে রাম রহিম ভক্তদের যথেচ্ছ গুণ্ডাগিরির পর সন্ধেবেলা হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর রাজ্যবাসীকে গুণ্ডাদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানান। কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়, যারা দোষ করছে তাদের শাস্তি হবে, এমনও আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী।

অন্যদিকে হরিয়ানা জুড়ে হিংসায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। কয়েকশো মানুষ আহত। কয়েকশো গাড়ি আগুনে পুড়ে গেছে। যদিও হরিয়ানা পুলিশের দাবি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। অবস্থা আয়ত্তে আনতে বিকেলের পরে সেনা ও সিআরপিএফ নামে হরিয়ানার রাস্তায়।

পঞ্জাব হরিয়ানা হাইকোর্ট এদিন সরকারি ও অন্যান্য সম্পত্তির ক্ষতির বহর দেখে সুয়োমোটো রায়ে ডেরা সচ্চা সৌদার সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। যে ক্ষয়ক্ষতি এদিনের তাণ্ডবের ফলে হয়েছে তার পূরণ এই সম্পত্তি বেচেই করা হবে বলেও জানিয়েছে আদালত। ১৯৪৮ সালে তৈরি ডেরা সচ্চা সৌদার জন্য এই রায় চূড়ান্ত ধাক্কা বলেই মনে করা হচ্ছে।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button