পরিবেশের ভারসাম্য ধরে রাখতে বিয়েই করলেন না এ যুগের ভীষ্ম
কম বয়সে রেডিওতে শোনা একটা লাইন তাঁকে এতটাই নাড়া দিয়ে যায় যে সেই লক্ষ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বিয়ে থেকে নিজেকে দূরে রাখলেন এ যুগের ভীষ্ম।
সাধারণ পরিবারের ছেলে তিনি। ৪ ভাই। তিনিই বড়ভাই। তাঁর পরের ৩ ভাই বিয়ে করে এখন ঘোর সংসারী। কিন্তু তিনি বিয়ে করলেন না। কিছুটা ভয় থেকেই বিয়ে থেকে দূরে থাকলেন তিনি।
তিনি যখন ছোট তখন রেডিওতে একটি অনুষ্ঠান হচ্ছিল। সেখানে তিনি শোনেন যে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে গাছের প্রয়োজনীয়তার কথা। গাছ বাঁচানোর কথা। না হলে অক্সিজেনের অভাবে মানবসভ্যতাই শেষ হয়ে যাবে।
রেডিওয় শোনা সেই লাইনগুলো তাঁর জীবনটাই বদলে দেয়। তিনি স্থির করেন সবুজ রক্ষার জন্য আজীবন লড়াই চালিয়ে যাবেন। গাছদের দেখভালের সঙ্গে সঙ্গে অনেক চারা গাছ পোঁতাও শুরু করেন তিনি।
তারপর থেকে এখনও গাছদের সঙ্গেই তিনি জীবন কাটাচ্ছেন মনের আনন্দে। গাছেরাই তাঁর পরিবার। গাছদের সঙ্গে প্রতি বছর দশেরা, দিওয়ালী, রাখিবন্ধন সবই পালন করেন তিনি।
এখনও পর্যন্ত তিনি ৮ লক্ষের ওপর গাছ পুঁতেছেন। সবুজকে রক্ষা করাই তাঁর একমাত্র লক্ষ্য। পাছে বিয়ে করলে গাছেরা যথেষ্ট গুরুত্ব পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়, তাই তিনি বিয়ে করেননি। সংসার করলে গাছদের জন্য সময় কমে যাবে যে!
দ্বাপর যুগের ভীষ্মের সঙ্গে এখন তাঁকে তুলনা করা হয়। তিনি গজেন্দ্র যাদব। বিহারের পশ্চিম চম্পারণ জেলার পিপরা গ্রামের বাসিন্দা গজেন্দ্র বট, অশ্বত্থ, নিমের মত গাছ পুঁততে বেশি পছন্দ করেন।
কারণ গজেন্দ্র বিশ্বাস করেন এই গাছগুলো শুধু নিজেরাই বাঁচেনা, পাখিদের আশ্রয় দেয়, ছাওয়া দেয়, প্রাণিদেরও রক্ষা করে। সেইসঙ্গে এসব গাছ বন্যার সময় ভূমিক্ষয় রোধ করে।
বর্তমানে গজেন্দ্রর এই গাছের প্রতি অপার ভালবাসা এবং বৃক্ষরোপণের লড়াইয়ের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন শতাধিক তরুণ। তাঁরাও গজেন্দ্রকে এখন গাছ পুঁততে সাহায্য করছেন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা