টানা ২৭ বছর ধরে ধর্না, লড়াইয়ের ইতিহাস লিখলেন প্রাক্তন শিক্ষক
চাইলে শান্তিতে স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি করে জীবন কাটিয়ে দিতে পারতেন তিনি। কিন্তু গ্রামের স্বার্থে একা এক ঐতিহাসিক লড়াই চালাচ্ছেন প্রাক্তন শিক্ষক।
১৯৯৬ সালে তখন তিনি স্কুলে পড়ান। যুবা বয়স। নিশ্চিন্তে চাকরি করে সুখে শান্তিতে জীবন কাটাতে পারতেন। কিন্তু মেনে নিতে হল গ্রামের প্রতি অবিচার। তাতে কি! তাঁর সঙ্গে তো হয়নি। গোটা গ্রামের সঙ্গে হয়েছে। তিনি একা কেন লড়তে যাবেন!
এভাবে কিন্তু ভেবে দেখেননি বিজয় সিং। বরং গ্রামের স্বার্থের কথা ভেবে এক লড়াই শুরু করেন। শুরু করেন ধর্না। আর সেই ধর্নাকে অবিচ্ছেদ্য ভাবে চালিয়ে যেতে স্কুলের চাকরিটাও ছেড়ে দেন।
বিজয় সিংয়ের দাবি, তাঁর গ্রামের অধিকাংশ জমি জমি মাফিয়ারা জোর করে দখল করে নিয়েছে। তার বিরুদ্ধেই ১৯৯৬ সালে মুজফ্ফরনগরের শিব চক নামে জায়গায় ধর্নায় বসেন বিজয় সিং। তারপর থেকে সেই ধর্না অব্যাহত।
বছর ঘুরতে ঘুরতে বিজয় সিং এখন ৬০ বছরের বৃদ্ধ। কিন্তু এই ২৭ বছরেও তাঁর দাবি তিনি বিচার পাননি। তাই ধর্নাও তিনি তুলছেন না।
২৭ বছর ধরে ধর্না মানে তো প্রায় জীবনটাই ধর্নায় দিয়ে দেওয়া। কিন্তু এমন মানুষও রয়েছেন। যাঁরা এভাবেই সব ত্যাগ করে নিজের লক্ষ্যে অবিচল থেকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যান।
উত্তরপ্রদেশের শামলি জেলার চৌসানা গ্রামের বাসিন্দা বিজয় সিংয়ের দাবি, তিনি একসময় তাঁর গ্রামে জমি মাফিয়াদের জমি জবরদখলের বিরুদ্ধে ধর্নার মাঝেই তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের সঙ্গে দেখা করেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। পরে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসে। ২০১৭ সালে বিজয় সিং মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গেও দেখা করেন।
যোগী আদিত্যনাথ তাঁকে বিষয়টিতে নিরপেক্ষ তদন্তের আশ্বাস দেন। তদন্তও হয়। তাতে বিজয় সিং-এর দাবিই সত্য বলে প্রমাণিত হয়।
কিন্তু ২০১৯-এ সেই রিপোর্ট সামনে আসার পর এখনও সুরাহা সেই বিশ বাঁও জলে। ফলে তিনিও তাঁর অবস্থান থেকে নড়বেন না। ২৭ বছর চালিয়েছেন। সামনের দিনেও তাঁর ধর্না চলবে, যতদিন না তাঁর গ্রামের ১ হাজার বিঘা জমি মাফিয়াদের জবরদখল থেকে মুক্ত না হয়। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা