একরাশ যন্ত্রণা নিয়ে মুখ খুললেন কপিল দেব
এ শিল্পের সুনাম যে ধ্বংস হয়ে গেছে এমনটা নয়। কিন্তু তা হারিয়ে যাচ্ছে। অন্ধকারে হারাচ্ছে বাহান্ন বুটি শাড়ির চাহিদা। একরাশ যন্ত্রণা নিয়ে মুখ খুললেন কপিল দেব।
বাহান্ন বুটি শাড়ির সুনাম আজকের নয়। বিহারের নালন্দার এই শিল্পকলা শাড়িতে ফুটে উঠত তাঁতশিল্পীদের হাতের জাদুতে। তার চাহিদা যেমন ছিল দেশে, তেমনই ছিল বিদেশে। বাহান্ন বুটি শাড়ি বলেই নয়, বাহান্ন বুটি পর্দার কাপড়ও ছিল বিখ্যাত।
স্বাধীন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ রাষ্ট্রপতি ভবনে এই বাহান্ন বুটি পর্দা লাগিয়েছিলেন। তাঁর বিছানায় পাতা থাকত বাহান্ন বুটি বেডশিট। সেই বাহান্ন বুটি শিল্প আজ হারাতে বসেছে। এই বিশেষ শিল্পে পারদর্শী তাঁতশিল্পীরা ক্রমশ এই কাজ থেকে সরে যাচ্ছেন।
তাঁতের মাকুগুলি এখন অধিকাংশ পরিবারে বহুদিনের অব্যবহারে ধূলি ধূসরিত। এ শিল্প বংশপরম্পরায় চলে। কিন্তু নতুন প্রজন্মের এ শিল্পে আসতে অনীহা স্পষ্ট।
অবশ্যই অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ, বাহান্ন বুটির চাহিদা কমে যাওয়া, যথেষ্ট প্রচারের অভাব এবং বাজারে ঠিকমত এই বাহান্ন বুটি শিল্পকে তুলে ধরায় খামতি ক্রমশ এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষগুলোকে কোণঠাসা করে দিয়েছে। বর্তমান প্রজন্মের অনেক তরুণী বাহান্ন বুটি শাড়ির কথাই হয়তো জানেন না।
এই শিল্পের সঙ্গে ৪ পুরুষ ধরে যুক্ত এমনই এক পরিবারে এখন হতাশার মেঘ। শনিচর তাঁতির হাত ধরে এই পরিবারে প্রবেশ করেছিল বাহান্ন বুটি শিল্পের কাজ। তারপর তা এগিয়ে নিয়ে যান হর তাঁতি।
হর তাঁতির ছেলে কপিল দেব প্রসাদ এখন টেনে নিয়ে চলেছেন পারিবারিক তাঁত। কিন্তু ক্রমশ হারাতে বসা এই শিল্পকর্ম নিয়ে হতাশা আছড়ে পড়ছে কপিল দেবের গলায়।
কপিলের ছেলে সূরজ দেব তাঁকে এখনও সাহায্য করছেন এই তাঁত চালাতে। কিন্তু এভাবে কতদিন? নালন্দার বিশ্বপ্রসিদ্ধ শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এবার প্রশাসনিক উদ্যোগের অপেক্ষায় কপিল দেব। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা