সকালে পাড়ার ঝাড়ুদার হলেও সারাদিনে একজন সফল ব্যবসায়ী, নাম তাঁর ঝাড়ু বাবা
তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী। যথেষ্ট ধনী মানুষ। কিন্তু ভোর হলে তিনিই পাড়ার ঝাড়ুদার। শুধু এলাকা নয়, তল্লাট জুড়ে তিনি এখন ঝাড়ু বাবা।
ভোর ৪টেয় উঠে পড়েন ঘুম থেকে। তারপর হাতে ঝাড়ু নিয়ে নেমে পড়েন রাস্তায়। গোটা পাড়া ঝাড়ু দিয়ে ভাল করে পরিস্কার করেন। শুধু নিজের পাড়া বলেই নয়, বিভিন্ন দিনে তিনি হাজির হন শহরের বিভিন্ন এলাকায়। সেখানে সেদিন তিনি ঝাড়ু দেন।
সকাল ৮টা পর্যন্ত রাস্তা ঝাঁট দেওয়া, ময়লা সাফ করার পর তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। এবার তৈরি হওয়ার পালা। বাড়ি থেকে কর্মজীবনের দৌড়ে শামিল হতে তিনি খেয়েদেয়ে বেরিয়ে পড়েন।
তাঁর কম্পিউটার এবং ক্যামেরার দোকান রয়েছে। ২টি দোকানই সদাব্যস্ত থাকে। ব্যবসা থেকে অর্থের প্রাচুর্যের অভাব নেই মহেশ শুক্লা ওরফে ঝাড়ু বাবা-র।
এখন প্রশ্ন হল যদি অর্থবান মানুষই হন, তাহলে ঝাড়ু দেন কেন? এ পেশার প্রয়োজন কি? মহেশ শুক্লা কিন্তু পেশায় ঝাড়ুদার নন, বরং পরিচ্ছন্নতার বার্তাবাহক।
২০০৮ সাল থেকে তিনি সেই যে রাস্তায় ঝাঁট দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন, আর কখনও থামেননি। প্রথমদিকে একাই ঝাড়ু দিতেন রাস্তায়। প্রতিবেশিরা অবাক চোখে দেখতেন। কিন্তু যখন তাঁর উদ্দেশ্য বুঝতে পারেন তখন এক এক করে বিভিন্ন মানুষ পাশে এসে দাঁড়ান।
উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের মানুষ এখন মহেশ শুক্লাকে এক ডাকে চেনেন। তিনি এখন শহরের ঝাড়ু বাবা। ঝাড়ু বাবার এই পরিচ্ছন্নতার লড়াইয়ে তিনি এখন পাশে পেয়েছেন প্রায় ৭০০ জন স্বেচ্ছাসেবককে।
এদিকে পরিচ্ছন্নতার এই লড়াই চালাতে গিয়ে পকেট থেকে ইতিমধ্যেই তিনি ১০ লক্ষ টাকার বেশি খরচ করে ফেলেছেন। পুরসভার সাফাইকর্মীদের জলের বোতল দেওয়া থেকে সাফাই সরঞ্জামের ব্যবস্থা করা, সবই চালিয়ে যান তিনি। কোনও কিছু পাওয়ার আশায় নয়, মহেশ শুক্লার মতে, শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে তিনি এই নিরলস লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা