১৪ বছরের বনবাস সেরে ফিরে এল সুর, অবিশ্বাস্য কাণ্ডে লাফিয়ে উঠলেন বঙ্গসন্তান
জঙ্গলে নানা ডাক শুনে শুনে তাঁর এবং তাঁর দলের বাকিদের কান এতটাই পারদর্শী যে ডাকটি কার তা অনায়াসে বলে দিতে পারেন। সেখানেই এক ডাক শুনে অবিশ্বাস্য মনে হল তাঁর।
তিনি যা ভাবছেন এ ডাক কি তারই? এই সুরেলা কণ্ঠ কি তারই গলা। বিশ্বাস করা কঠিন। কারণ ১৪ বছর আগে এ সুর চিরজীবনের মত হারিয়ে গিয়েছিল। ১৪ বছর পার করে যে তার সুর ফের কানে বেজে উঠবে তা বিশ্বাস করতে পারছিলেননা কৌশিক সরকার।
কৌশিকবাবু প্রথমে শুনতে পাননি। তাঁর নেতৃত্বে তৈরি দলের প্রবর মৌর্য প্রথম শুনতে পান ডাকটি। বহু পুরনো সুর। কিন্তু তিনি একবার শুনেই চিনতে পারেন। জানান কৌশিকবাবুকে। তিনিও আওয়াজ শুনেই চিনতে পারেন।
এ তো জার্ডনস ব্যাবলার পাখির ডাক। কিন্তু এ পাখি তো ১৪ বছর আগেই হারিয়ে গিয়েছিল চিরতরে। অন্তত তেমনই মনে করেন বিশেষজ্ঞেরা। সে ১৪ বছর পর ফিরে এল। এতদিনে এ পাখি ছিল কোথায়!
নিশ্চিত হতে স্পেকট্রোগ্রামে ফেলে এ পাখিরই ডাক কিনা তা খতিয়ে দেখা হয়। আর তা মিলেও যায়। অর্থাৎ এই খয়েরি পাখি ফিরে এসেছে। বিশ্বাস করা কঠিন হচ্ছিল বায়োলজিস্ট কৌশিক সরকার এবং তাঁর দলের বাকিদের।
উত্তরপ্রদেশের দুধওয়া জাতীয় উদ্যান লাগোয়া সারদা নদী তীরবর্তী বিশাল জঙ্গলের বাস্তুতন্ত্র ও পাখির অস্তিত্ব খতিয়ে দেখছিল দলটি। তারাই এই পাখির খোঁজ পেয়েছে।
কৌশিকবাবু মনে করছেন একটা পাখির ডাক যখন শোনা গেছে তখন এ জঙ্গলে একাধিক জার্ডনস ব্যাবলার রয়েছে। তবে এরা খুবই ছোট্ট চেহারার হয়। খুবই লাজুক এই পাখি। সহজে নজরে পড়ে না। দ্রুত নিজেকে ঘাসের জঙ্গলে লুকিয়ে ফেলতে পারে।
তবে এর অস্তিত্ব যে ফের মিলেছে এতেই আনন্দে আটখানা কৌশিক সরকার ও তাঁর দল। এজন্য এখানকার ঘন জঙ্গল ও প্রচুর ঘাস জমির অবদান মেনে নিচ্ছেন তাঁরা। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা