৪০ বছরের পরিশ্রমে মানুষের সঙ্গে হাতির হাত মেলালেন হস্তি কন্যা
৪০ বছর জীবনের দিয়ে দিয়েছেন কেবল একটি কাজে। তাও আবার ভারতে এই প্রথম। এই দীর্ঘ লড়াইয়ের পর তিনি মানুষের সঙ্গে হাতির হাত মিলিয়ে দিয়েছেন।
তাঁর সম্বন্ধে সব কথা বলার আগে তাঁর পরিচয়টা একটু বলে দেওয়া দরকার। যা শোনার পর, তাঁর পারিবারিক পরিচিতি যে কোনও মানুষকে চমকে দিতে পারে। তিনি নিজে পদ্মশ্রী প্রাপক। তাঁকে গোটা দেশ চেনে হস্তি কন্যা বলে।
তাঁর সম্বন্ধে একটি বই লিখেছেন ব্রিটিশ পর্যটন বিষয়ক লেখক মার্ক রোনাল্ড স্যান্ড। সে বইয়ের নাম ‘কুইন অফ দ্যা এলিফ্যান্টস’। মানে তাঁকে হস্তিরানি বলে সেখানে সম্বোধন করেছেন লেখক।
নিজে বর্ধিষ্ণু পরিবারের মেয়ে। ভারতীয় চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রমুখ ব্যক্তিত্ব প্রমথেশ বড়ুয়া তাঁর আত্মীয়। পদ্মশ্রী প্রাপ্ত লোকগীতি গায়িকা প্রতিমা পাণ্ডে বড়ুয়া তাঁর বোন। আর তিনি ৬৭ বছরের পার্বতী বড়ুয়া ভারতের প্রথম মহিলা মাহুত।
গত ৪০ বছর ধরে তিনি লড়াই চালিয়ে গেছেন কেবল হাতির পরিচর্যায় নয়, হাতিদের সুস্থ সুন্দর জীবন দিতে। যে হাতির দল গ্রামে ঢুকে খাবারের জন্য হামলা চালাত, তাদের ফের জঙ্গলে ফিরিয়ে দিতে পেরেছেন তিনি।
হাতিরা যাতে প্রকৃতির বুকে নিশ্চিন্তে জীবনযাপন করতে পারে তার ব্যবস্থাও পাকা করতে পেরেছেন তিনি। লোকালয়ে হাতির হামলা চিরকালই হাতি ও মানুষের মধ্যে এক লড়াইকে জিইয়ে রাখে।
অসমের এক বড় অংশে সেই হাতিদের জঙ্গলে ফিরিয়ে মানুষের সঙ্গে তাদের লড়াইকে সমাপ্ত করতে পেরেছেন এই নারী। হাতি ও মানুষের সখ্যতা গড়ে তুলেছেন।
মানুষ ও হাতির দ্বন্দ্ব মেটাতে সরকারি আইনকেও হাতিয়ার করেছেন তিনি। সব মিলিয়ে তিনি হাতিদের পরম বন্ধু। যে মাহুতের কাজকে একচেটিয়া পুরুষদের কাজ বলেই ভারতবাসী জানেন, তিনিই প্রথম মহিলা যিনি পুরুষদের এই মাহুতের কাজের পরিচিত গণ্ডি ভেঙে প্রথম মহিলা মাহুত হিসাবে নিজেকে সামনে এনেছেন।
অসমের গোয়ালপাড়া জেলার মেয়ে পার্বতী বড়ুয়া কোকরাঝাড় জেলায় বাবার সঙ্গে এক হাতির পরিচর্যা দিতে হাতিদের প্রতি স্নেহময়ী হয়ে ওঠেন। সেই নারী আজ ভারতের হস্তি কন্যা। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা