১৭৫ বছর পার করা মৎস্য প্রসাদ পেতে বহুদূর থেকে হাজির হন মানুষ
আগেভাগেই জানিয়ে দেওয়া হয় বিনামূল্যে মৎস্য প্রসাদ কবে বিলি করা হবে তার দিনক্ষণ। যাতে দূরদূরান্ত থেকেও মানুষ আসার বন্দোবস্ত পাকা করতে পারেন।
ভারত এমন এক দেশ যেখানে প্রতিটি কোণায় এমন কিছু প্রচলন দেখতে পাওয়া যায় যা অনেককে অবাক করতে পারে। বিশ্বাসে ভর করে সেখানে মানুষের ঢল নামে। এমনই একটি হল ১৭৮ বছর ধরে চলে আসা মৎস্য প্রসাদ বা ফিশ প্রসাদম।
এক ধরনের ভেষজ মিশ্রণে মাখা গরস মুখে মুখে ফেলে দেওয়া হয় ভক্তের। এটাই রীতি। যা খুব দ্রুত গলা দিয়ে হড়কে চলে যায় পেটে। শুধুই কি প্রসাদ খেতে এভাবে মানুষ দূরদূরান্ত থেকে হাজির হন এই মৎস্য প্রসাদ পেতে?
আসলে এমন কথিত যে এই মৎস্য প্রসাদ হল হাঁপানিতে অব্যর্থ। হাঁপানি সেরে যায় এটা পেটে গেলে। এ কি দিনের পর দিন খেয়ে যেতে হয়? একেবারেই নয়। বছরে একবার খেলেই যথেষ্ট। তবে বলা হয় একবার খেলে টানা ৩ বছর ওটা সেবন করা ভাল। তাতে ফল ভাল হয়।
বাথিনি পরিবার এই মৎস্য প্রসাদ বিনামূল্যে সকলকে দিয়ে চলেছে ১৭৮ বছর ধরে। একের পর এক প্রজন্ম যায়, কিন্তু পারিবারিক এই প্রচলন বন্ধ হয়না। বাথিনি মৃগশিরা ট্রাস্টের নামে এই বিশেষ প্রসাদ বিতরণের ব্যবস্থা হয় প্রতিবছর।
এবার তা শুরু হচ্ছে ৮ জুন। শেষ হবে ৯ জুন। ২ দিন ধরে এই প্রসাদ বিতরণ চলবে। বহু মানুষ এই প্রসাদ পেতে নানা প্রান্ত থেকে হাজির হবেন হায়দরাবাদের নামপল্লিতে।
এই প্রসাদ হাতে দেওয়া হয়না। সরাসরি মুখে ফেলে দেওয়া হয়। একসময় এই প্রসাদ নিয়ে প্রশ্ন তুলে কিছু মানুষ আদালতেও হাজির হয়েছিলেন। আদালতের নির্দেশে প্রসাদের পরীক্ষাও হয়। যদিও তাতে ক্ষতিকারক কিছু পাওয়া যায়নি।
বাথিনি পরিবারের দাবি, ১৮৪৫ সালে তাদের পরিবারের একজনকে এক সাধু এই গোপন মিশ্রণ ফর্মুলাটি দিয়েছিলেন। শর্ত ছিল একটাই, এই মিশ্রণ তারা কখনও অর্থের বিনিময়ে কাউকে খাওয়াতে পারবেনা। অর্থাৎ বিক্রি করতে পারবেনা। সেটা আজও ওই পরিবার অক্ষরে অক্ষরে পালন করে চলেছে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা