এদেশে বর্ষায় বন্ধ থাকে জঙ্গল, পিছনে রয়েছে চমকে দেওয়া কারণ
রবিবার থেকেই বন্ধ হয়ে গেল দেশের অধিকাংশ জাতীয় উদ্যানের দরজা। কেন বর্ষায় বন্ধ থাকে জঙ্গল। রয়েছে একাধিক চমকে দেওয়া কারণ।
রবিবার থেকে ভারতের অধিকাংশ জাতীয় উদ্যানের দরজা পর্যটক বা সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধ হয়ে গেল। প্রতিবছরই হয়। বর্ষার শুরুতে বন্ধ হয়ে প্রায় বর্ষার শেষে ফের খুলে যায় জঙ্গল। পর্যটকরা ফের জঙ্গলে ঘোরার অনুমতি পান। সাফারি করেন। কিন্তু কেন এই কয়েক মাস বন্ধ থাকে জাতীয় উদ্যানগুলির দরজা? এর পিছনে একাধিক চমকপ্রদ কারণ রয়েছে।
বর্ষা এমন একটা সময় যে সময় অধিকাংশ বন্যপ্রাণি সঙ্গমে লিপ্ত হয়। এটাই তাদের ব্রিডিং টাইম। এই সময় তারা একান্ত ব্যক্তিগত সময় কাটাতে চায়। কোনও মানুষ বা গাড়ির দেখা পেতে চায়না। কারও ধারেকাছে ঘেঁষা পছন্দ করেনা। এই সময় শান্তিতে সন্তান প্রসব ও প্রতিপালনেও সময় দেয় বনের প্রাণিরা।
বর্ষার সময় জঙ্গলের পথ বিপদসংকুল হয়ে ওঠে। গাড়িও হড়কে যাওয়ার ভয় থাকে। কোথায় মাটি আলগা হয়ে আছে, কোথায় বৃষ্টির কারণে জল ভরেছে, এসব পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়া থেকে পর্যটকদের দূরে রাখাও জরুরি। যাতে তাঁদের কোনও ক্ষতি না হয়। বর্ষায় জঙ্গল কিন্তু মোটেও নিশ্চিন্ত জায়গা নয়।
জাতীয় উদ্যানগুলির রক্ষণাবেক্ষণও দরকার পড়ে। সেগুলিকে ঠিক করে রাখাও জরুরি। এজন্য প্রয়োজনীয় যা করার তা বন বিভাগ এই সময় সেরে নিতে পারে। পর্যটকদের আসা যাওয়া না থাকায় জঙ্গলের দেখভালে তারা পুরো সময় ও মন দিতে পারে।
শুধু বন্যপ্রাণ বলেই নয়, প্রকৃতিও বর্ষার সময় নিজের প্রয়োজনীয় কাজ সেরে নেয়। এই সময় গাছ আরও বৃদ্ধি পায়, সবুজ হয়ে ওঠে, জল প্রয়োজনীয় মাত্রা পায়, প্রকৃতি এই সময় নিজেকে কোনও মানুষের থেকে দূরে রেখে নিজেকে নিজের মত করে সাজিয়ে নেয়। মানুষ পায়ে হেঁটে ঢুকলে বা গাড়ি ঢুকতে থাকলে কাঁচা পথের মাটি নষ্ট হয়, প্রকৃতিও কিছুটা নষ্ট হয়। জঙ্গল বন্ধ থাকলে এসব সমস্যা ছাড়াই প্রকৃতি তার মাটির হালও ঠিক করে নেয়।
বর্ষার সময় প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণ নিজেদের মত করে সময় কাটায়। যা বাস্তুতন্ত্রের সামঞ্জস্য রক্ষা করতে সাহায্য করে। তাই জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ষার সময় দেশের অধিকাংশ জঙ্গল বন্ধ থাকে। পর্যটকরা ঢুকতে পারেননা। ব্যতিক্রমও আছে। যেমন জিম করবেট ন্যাশনাল পার্কের একটা অংশ আবার সারাবছরই পর্যটকদের জন্য খোলা থাকে।