মুরগি চোর কে, জানতে পেরে কৃষকের চক্ষু চড়কগাছ
তাঁর মুরগি এক এক করে বেপাত্তা হয়ে যাচ্ছিল। একসময় তিনি জানতে পারেন তাঁর মুরগি চোর কে। তারপরই শুরু হয় কৃষকের অন্য লড়াই।
পেশায় কৃষক তিনি। বাড়িতে কয়েকটি মুরগিও পুষেছিলেন। ভারতের মত দেশে অনেক কৃষক পরিবারেই মুরগি পোষার রেওয়াজ আছে। ২০২২ সালের জুন মাসে তিনি লক্ষ্য করেন তাঁর মুরগির সংখ্যা কমছে। আর তা কমছে প্রায় প্রতিদিনই।
কোথায় যাচ্ছে মুরগিগুলি? প্রথমে ওই কৃষকের স্থির বিশ্বাস হয় কেউ না কেউ তাঁর মুরগি চুরি করে পালাচ্ছে। অগত্যা তিনি কড়া নজরদারি শুরু করেন। এটা দেখার চেষ্টা করেন কে তাঁর মুরগি চুরি করে!
এই নজরদারি করতে গিয়ে তিনি মুরগি চোরের হদিশ পেয়ে যান। তবে সে মুরগি চোর কোনও মানুষ নয়। একটি অতিকায় পাইথন। পাইথনটি লুকিয়ে এসে তাঁর মুরগি নিয়ে চলে যায়।
ওই কৃষক আর অপেক্ষা না করে বন দফতরে বিষয়টি জানান। বন দফতর এই খবর পাওয়ার পর দ্রুত হাজির হয়ে ওই পাইথনটিকে পাকড়াও করে নিয়ে যায়। ফলে বাকি মুরগিদের রক্ষা করতে সমর্থ হন ওই কৃষক।
কেরালার কাসারগড় জেলার বাসিন্দা কেভি জর্জ নামে ওই কৃষক এরপর বন দফতরের কাছেই জানতে পারেন যে পাইথন কেরালায় একটি স্টেট প্রোটেকটেড বা রাজ্যসরকার সংরক্ষিত প্রাণি। ফলে তিনি তাঁর মুরগি খেয়ে নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ চাইতে পারেন।
এটা জানার পরই ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করে দেন ওই কৃষক। সরকার সংরক্ষিত মানে সেই পাইথন দ্বারা কারও কোনও ক্ষতি হলে তার ক্ষতিপূরণও সরকারের দায়িত্ব।
এই যুক্তি সম্বল করে ওই কৃষক নানা অফিসে ঘোরেন। কিন্তু ক্ষতিপূরণ পাচ্ছিলেন না। ১ বছর পর কেরালার এক মন্ত্রীর জনতা আদালতে হাজির হয়েও তিনি তাঁর অভিযোগ ব্যক্ত করেন।
তাতেও কাজ না হওয়ায় প্রায় ২ বছর পর তিনি মানবাধিকার রক্ষা কমিশনের দ্বারস্থ হওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছিলেন। তখনই তাঁর কাছে কেরালার বন দফতর থেকে একটি ফোন আসে। ফোনে জানানো হয় ক্ষতিপূরণ বাবদ ২ হাজার টাকা তাঁর জন্য ধার্য হয়েছে। ২ বছরের লড়াইয়ের পর অবশেষে হাসি ফোটে ওই কৃষকের মুখে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা