বিয়ে হয়েছিল ৪ মাস বয়সে, ২১ বছরে পৌঁছে হাসি ফুটল তরুণীর মুখে
এ ঘটনা কেবল ঘটনা নয়, কাহিনি হয়ে থেকে যাবে। যে মেয়ের জন্মের ৪ মাসের মধ্যে বিয়ে হয়ে গিয়েছিল, তার মুখে হাসি ফুটল ২১ বছর বয়সে এসে।
জন্মের পর মুখেভাত হয়নি। তার আগে বিয়ে হয়ে গিয়েছিল। তখন তাঁর বয়স মাত্র ৪ মাস। অনিতা জানতেও পারেননি তাঁর বিয়ে হয়ে গেল। ক্রমে বড় হতে থাকেন তিনি। কৃষক পরিবারের মেয়েকে একটু বড় হতেই শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ বাড়তে থাকে।
তথাকথিত শ্বশুরবাড়ির তরফ থেকে চাপ আসতে থাকে। ২১ বছরে পৌঁছে তরুণী অনিতা এমন এক শৃঙ্খলে আবদ্ধ যে তা থেকে মুক্তির পথ নেই বলেই মনে করছিলেন তিনি। স্বপ্নপূরণ তো অনেক দূরের কথা।
এই সময় তাঁর সঙ্গে দেখা হয় যোধপুরের সারথি ট্রাস্টের সদস্য কৃতী ভারতীর। অনিতা কৃতীকে সব খুলে বলেন। তাঁর বাল্যবিবাহ এবং তা থেকে তৈরি হওয়া জীবন যন্ত্রণার কথা। সেই ভয়ংকর বন্ধন থেকে মুক্তি পেতে চান বলেও জানান অনিতা।
কৃতী ভারতী এরপর পরিবার আদালতে অনিতাকে নিয়ে হাজির হন। যোধপুরের পরিবার আদালতের বিচারক এতদিনে সেই মামলার রায় দিলেন। রায় গেল অনিতার পক্ষেই।
বিচারক সাফ জানিয়েছেন, বাল্যবিবাহ সমাজের এক ভয়ংকর সমস্যা। তা মুছে দেওয়ার জন্য পদক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে বলেও জানান বিচারক বরুণ তলওয়ার। অনিতার বাল্যবিবাহকে বাতিল বলে ঘোষণা করেন তিনি।
আদালতের এই রায়ে গত ২০ বছরের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেলেন অনিতা। ৪ মাসে তাঁর অজান্তেই হওয়া বিয়ে নাকচ হওয়ার পর এখন তিনি যেন শৃঙ্খল মুক্ত এক পাখি।
অনিতা চান নিজের পায়ে দাঁড়াতে। নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে। যা গত ২০ বছরে তিনি করতে পারেননি তা এবার করতে চান তিনি। অনিতার এই ঘটনা পথ দেখাল ঠিকই, তবে এমন কতই অনিতা হয়তো বাল্যবিবাহের কারণে জীবন যন্ত্রণা ভোগ করে চলেছেন।
তাঁদেরও সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে সমাজে নিজের মত করে বাঁচার, তাঁদের অজান্তেই বেঁধে দেওয়া শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পাওয়ার। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা