ফলের মধ্যে জ্বলে ওঠে আগুন, ছোঁড়া হয় একে অপরের দিকে, পালিত হয় হিঙ্গোত
ভারতে এমন অনেক পরম্পরা রয়েছে যা শুনলে অবাক লাগতে পারে। কিন্তু তা বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে। যে আগুন ফল ছোঁড়া হয় একে অপরের দিকে।
আপাতদৃষ্টিতে এমন পরম্পরা বন্ধ হওয়া উচিত বলেই মনে হতে পারে। কিন্তু এটা একটা পুরাতনি পরম্পরা। যা ২টি গ্রামের মানুষ বহু প্রজন্ম ধরে মেনে আসছেন। তাই এখনও সে পরম্পরা আবহমান।
পুলিশ থাকে বটে। এটা দেখার জন্য থাকে যে এই আগুন জ্বলা ফলের লড়াই কোনও বাড়াবাড়ি রূপ না নেয়। তৈরি থাকেন চিকিৎসক, থাকে অ্যাম্বুলেন্সও। যাতে কেউ আঘাত পেলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা করা যায়।
তার মানে এ লড়াই যথেষ্ট ঝুঁকির। কিন্তু বহু বহু বছর ধরে এই হিঙ্গোত যুদ্ধ চলে আসছে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের গৌতমপুরা এলাকায়। কি এই পরম্পরা? হিঙ্গোত যুদ্ধই বা কি? এর শুরু হয় একটা ফল দিয়ে।
প্রতিবছর দিওয়ালীর পরদিন রাতে এই যুদ্ধ হয়। ওই অঞ্চলে একটি ফল হয়। যার নাম হিঙ্গোত। এই ফল দিওয়ালীর অনেক আগেই পেড়ে নেওয়া হয় গাছ থেকে। তারপর সেগুলিকে শুকিয়ে ফেলা হয়।
শুকিয়ে গেলে সেই ফলের মধ্যে পুরে ফেলা হয় বারুদ। এবার সেটিকে কাঠের লম্বা টুকরোর একটা মুখে বেঁধে ফেলা হয়। তারপর সেই ফলের বারুদে আগুন দেওয়া হয়।
দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে হিঙ্গোত ফল। এবার সেই আগুন জ্বলা ফল বাঁধা কাঠের লম্বা টুকরোকে তিরের মত করে ছুঁড়ে দেওয়া হয় একে অপরের দিকে।
এখানে গৌতমপুরা এবং রুঞ্জি গ্রামের বাসিন্দারা প্রথমে পুজো সেরে তারপর তুরা এবং কলগী নামে ২টি গোষ্ঠীতে ভাগ হয়ে শুরু করেন লড়াই। একে অপরের দিকে ছুঁড়ে দেওয়া হতে থাকে আগুন ফল।
এবারও এই হিঙ্গোত যুদ্ধ পালিত হয়েছে। ১৫ জন আহতও হয়েছেন। প্রতিবছরই নানা সংখ্যায় আহত হন মানুষজন। তবে সে ঝুঁকি মাথায় করেই পরম্পরাকে বাঁচাতে প্রতিবছর হিঙ্গোত যুদ্ধে খামতি রাখেন না গৌতমপুরা এবং রুঞ্জি গ্রামের বাসিন্দারা। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা