রহস্যময় ট্রাক চালকের হাত ধরে ৩১ বছর পর বাড়ি ফিরলেন যুবক, কেঁদে ভাসালেন প্রতিবেশিরাও
তাঁকে দেখে পরিবারের সকলের চোখের জল বাঁধ মানেনি। এমনকি প্রতিবেশিরাও কেঁদে ভাসালেন। এক রহস্যময় ট্রাক চালক ৩১ বছর পর ফিরিয়ে দিলেন তাঁকে।
১৯৯৩ সালের কথা। তখন রাজু স্কুলে পড়েন। সে সময় স্কুল থেকে একাই বাড়ি ফিরছিলেন বালক রাজু। তবে বাড়ি ফেরা তাঁর হয়নি। তাঁকে মাঝরাস্তা থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপরটা এক যন্ত্রণার ইতিহাস।
রাজুকে নিয়ে যাওয়া হয় রাজস্থানে। সেখানে একটি কুঁড়ে ঘরে বন্দি করে রাখা হয় তাঁকে। নিয়মিত অত্যাচারের শিকার হতে থাকেন পড়ুয়া বালকটি। তাঁকে দিয়ে ছাগল ছড়ানো সহ নানা ফাইফরমাশ খাটানো হতে থাকে।
এক নিদারুণ দাসত্বের জীবন কাটাতে বাধ্য হন রাজু। এভাবেই কাটতে থাকে বছর। চরম লাঞ্ছনা, অত্যাচার সহ্য করেও রাজু একটা কথা বিশ্বাস করতেন। একদিন না একদিন তিনি ঠিক বাড়ি ফিরবেন। ভগবান হনুমানজির প্রতি ছিল তাঁর অগাধ বিশ্বাস।
এভাবেই কেটে যায় ৩১টা বছর। হালে রাজস্থানের জয়সলমীরের একটি জায়গায় অত্যন্ত করুণ অবস্থায় থাকা রাজুর সঙ্গে দেখা হয় এক ট্রাক চালকের। রাজু তাঁকে তাঁর জীবনের কথা খুলে বলেন।
সব শুনে ওই ট্রাক চালক স্থির করেন তিনি রাজুকে বাড়ি পৌঁছে দেবেন। তিনি এটাও জানতে পারেন যে রাজু গাজিয়াবাদের বাসিন্দা। ওই রহস্যময় ট্রাক চালক রাজুকে নিয়ে রওনা দেন গাজিয়াবাদের উদ্দেশে। তারপর থানার কাছে এসে রাজুকে একটি চিঠি হাতে দিয়ে থানায় পাঠিয়ে উধাও হয়ে যান।
ওই ট্রাক চালকের চিঠি ছিল পুলিশের কাছে একান্ত এক অনুরোধ। রাজুকে তাঁর বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার অনুরোধ। পুলিশ রাজুকে বাড়ি পৌঁছেও দেয়।
৩১ বছর পর যে রাজুকে আবার ফিরে পাবেন তাঁরা এটা বোধহয় ভাবতেও পারেননি পরিবারের সকলে। তাঁদের আনন্দাশ্রু বাঁধ মানেনি। খবর পেয়ে ছুটে আসেন পাড়ার সকলে। তাঁরাও রাজুকে দেখে চোখের জল আটকাতে পারেননি।
রাজু এখন এক যুবক। ওই ট্রাক চালককে এখন দেবদূত হিসাবেই দেখছে গোটা পরিবার। তাদের বিশ্বাস ভগবান হনুমানজি ওই রহস্যময় ট্রাক চালককে পাঠিয়েছিলেন রাজুকে উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দিতে। যে ট্রাক চালকের কোনও নাম বা ঠিকানা কিছুই জানতে পারেনি পুলিশ। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা