৫০ দিনের দুঃখ ভুলিয়ে এক অন্য সকাল দেখল ভূস্বর্গ, আনন্দে আত্মহারা বাসিন্দারা
আশা তো প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন তাঁরা। ৫০ দিনের দুঃখ কিন্তু ভুলিয়ে দিল একটা সকাল। এখন আনন্দে আত্মহারা ভূস্বর্গের বাসিন্দারা।

টানা ৫০ দিন দুঃখের মধ্যেই কাটিয়েছেন তাঁরা। প্রবল ঠান্ডা বা এমন কোনও কারণে নয়। এমন ঠান্ডার সঙ্গে তাঁরা পরিচিত। ঠান্ডায় তাঁদের সমস্যা হয়না। তাঁরা খুশি এক অন্য সকাল দেখে। যে সকালে তাঁরা দেখলেন অঝোরে বৃষ্টি ঝরছে উপত্যকা জুড়ে।
বরফে ঢেকে গেছে পাহাড়গুলো। টানা ৫০ দিন ধরে কাশ্মীর শুকিয়ে থেকেছে। না বৃষ্টি হয়েছে, না বরফ পড়েছে। এমন শীতকাল কাশ্মীরবাসী তাঁদের জীবদ্দশায় দেখেননি। টানা অনাবৃষ্টি ও তুষারপাত না হওয়ায় কাশ্মীর জুড়েই অধিকাংশ ঝর্না শুকিয়ে গিয়েছিল।
যেসব জলাধার রয়েছে, তার জল তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। নদীগুলির হালও বেহাল। এতটাই জলাভাব দেখা দিয়েছিল যে সেখানে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ৮০ শতাংশ কমে যায়।
শীতের দিনে নিচু জায়গায় বৃষ্টি ও পাহাড়ে তুষারপাতের ওপর অনেকটাই নির্ভর করে কাশ্মীরের মানুষের জন্য সঞ্চিত জল। যা তাঁদের গরমকালেও রেহাই দেয়। এইসময় জলাধারগুলি ভরে ওঠে। ঝর্নার জল প্রবল গতিতে ঝরতে থাকে।
কিন্তু সেসব গত ৫০ দিনে দেখা যায়নি। এদিকে শীত তো বিদায় নেওয়ার মুখে। তাই এবার এক খরা পরিস্থিতির জন্য মানসিকভাবে নিজেদের প্রস্তুত করতে শুরু করেছিলেন কাশ্মীরবাসী। আর ঠিক সেই সময় অবশেষে নামল বৃষ্টি। সঙ্গে প্রবল তুষারপাত।
আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে এই পরিস্থিতি ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কাশ্মীরে চলতে পারে। আর তা যদি ওই সময় পর্যন্ত চলে তাহলে যে জলাভাবের আশঙ্কায় কাশ্মীরবাসীর রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছিল, সে অভাব পূরণ হয়ে যাবে।
গত ৫০ দিনে তুষারপাত না হওয়ায় গুলমার্গে হতে চলা যে স্কি প্রতিযোগিতা, তাও বন্ধ করে দেওয়া হয় এবছরের মত। সেই শুকনো কাশ্মীর এবার ভিজছে। বৃষ্টিতে ভিজছে, বরফে ঢাকা পড়ছে।
যা দেখে আনন্দে আত্মহারা কাশ্মীরবাসী। শীতে বৃষ্টি বা তুষারপাত কম হওয়া মানেই কাশ্মীরে গ্রীষ্মকালে প্রবল জলাভাব। সেই চিন্তা দূর হবে বলেই আশাবাদী তাঁরা। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা