যাত্রীর হারানো ফোন ফেরত দিতে বাসে ১৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেন ট্যাক্সিচালক
পৃথিবীতে এখনও মনুষ্যত্ব বেঁচে আছে। যার উদাহরণ ফের একবার পাওয়া গেল। এক ট্যাক্সিচালকের মহানুভবতা চোখে জল আনল অনেকের।

রাত তখন প্রায় ১১টা। বাড়ি ফেরার জন্য এক ব্যক্তি আপ্রাণ চেষ্টা করছিলেন কোনওভাবে একটি অটো পেতে। নয়তো একটি অ্যাপ ক্যাব। কিন্তু অ্যাপ ক্যাবের জন্য ফোনে চার্জ থাকাটা জরুরি। সেটা তখন প্রায় শেষের পথে। রাস্তায় চার্জ দেওয়াও সম্ভব নয়।
কিছু না পেয়ে তিনি হাঁটতে শুরু করেন। রাতের দিকে রাস্তা কিছুটা ফাঁকাই। হাঁটতে হাঁটতে অনেকটাই বাড়ির কাছে পৌঁছে যান তিনি। আর ঠিক তখনই রাস্তার ধারে একটি ট্যাক্সি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন।
চালককে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন তিনি তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দেবেন কিনা। ট্যাক্সিচালক না করেননি। সামান্যই পথ বাকি ছিল। গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে ট্যাক্সিচালক জানান এটুকু পথের জন্য আর টাকা দিতে হবেনা।
ট্যাক্সিটি তাঁকে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়। আর তার পরেই ওই ব্যক্তি বুঝতে পারেন তাঁর ফোনটি তাঁর কাছে আর নেই। এটাও আন্দাজ করেন যে পকেট থেকে ট্যাক্সিতেই ওটা পড়ে গিয়ে থাকতে পারে।
বাড়ি ফিরেই তিনি তাঁর নম্বরে ফোন করেন। কিন্তু ফোনের চার্জ শেষ হয়ে সেটা তখন বন্ধ। ফলে ফোন ট্র্যাকারও কাজ করছেনা। তিনি ক্রমে বুঝতে পারেন তাঁর ফোনটি গেছে। কারণ ট্যাক্সির নম্বরটাও তাঁর দেখা হয়নি।
বেশ কয়েক ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পর একসময় তিনি জানতে পারেন তাঁর ফোনটি ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আন্দাজ করেন ট্যাক্সিচালকই হয়তো ফোনটি পেয়ে সেটিতে চার্জ দিয়ে সেটিকে সক্রিয় করেছেন।
দ্রুত নিজের ফোনে ফোন করেন ওই ব্যক্তি। ট্যাক্সিচালক ফোনটি ধরেন। জানান তিনি ফোনটা পেয়েছেন। চিন্তার কিছু নেই। তিনি ফোনটি বেঙ্গালুরু শহরে ওই ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেবেন। কিন্তু তিনি বেঙ্গালুরুতে ওই ব্যক্তিকে নামিয়ে ইতিমধ্যেই মাইসুরুতে এক যাত্রী নিয়ে চলে এসেছেন। তাই ফেরত দিতে একটু সময় লাগবে।
ওই ট্যাক্সিচালক এরপর বাস ধরে মাইসুরু থেকে বেঙ্গালুরু আসেন কেবল ওই ব্যক্তিকে হারানো ফোন ফেরত দিতে। ওই ব্যক্তির হাতে ফোনটি তুলে দেন ট্যাক্সিচালক।
ট্যাক্সিচালকের এই সততায় তখন আপ্লুত ওই ব্যক্তি। তিনি ১ হাজার টাকা দিতে চান ওই ট্যাক্সিচালককে। কিন্তু তিনি নিতে অস্বীকার করেন। পরে প্রায় জোর করেই তাঁকে ওই টাকাটা দেন ফোন ফেরত পেয়ে আনন্দিত ওই বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা। পুরো ঘটনার কথা তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানিয়েছেন। এটা পড়ার পর অনেকেই ট্যাক্সিচালকের সততা দেখে অভিভূত।