আগামী ৮ নভেম্বর নোট বাতিলের বর্ষপূর্তির দিন। ২০১৬ সালে ঠিক এইদিনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘোষণায় বদলে গিয়েছিল দেশের অর্থনৈতিক চেহারা। দুর্নীতি ও কালো টাকার কারবার রোধ করতে পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় মোদী সরকার। নোট বাতিলের পরবর্তী অবস্থা সম্পর্কে এরপর একে একে সরব হতে থাকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। এই সিদ্ধান্তে আখেরে কাদের লাভ হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে থাকেন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। খুচরো নোটের হাহাকার, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ প্রকাশ, ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়িয়ে মানুষের মৃত্যু, নানা ঘটনায় জেরবার নোট বাতিলের পরবর্তী দিনগুলো। তাই নোটবন্দির সেই ঘটনাকে সামনে রেখে কোমর বেঁধে আসরে নামার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বিরোধী দলগুলি।
আগেও বহুবার নোট বাতিল, জিএসটি, মোবাইল নম্বরের সঙ্গে আধার কার্ডের সংযোগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার নোট বাতিলের এক বছরে পা দেওয়ার দিনটিকে ‘কালাদিবস’ হিসেবে পালন করার ডাক দিলেন তিনি। নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে প্রথম থেকেই মমতা সমালোচনার বন্যায় ভাসিয়ে দিয়েছিলেন। সোমবার গোটা রাজ্য জুড়ে নোট-বাতিল বিরোধী কর্মসূচি সফল করার ডাক দিয়েছেন তিনি। নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে ‘জাতীয় বিপর্যয়’ বলে ব্যাখ্যা করে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে সোমবার থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ার ডিসপ্লে কালো করার প্রস্তাব দিয়েছেন মমতা।
অন্যদিকে কংগ্রেসও তাদের মতো করে দাবার ঘুঁটি সাজিয়ে ফেলেছে। একদিকে যখন নোট বাতিলের তারিখে দিল্লিতে কালো পোশাক পড়ে মানব-শৃঙ্খল তৈরি করে প্রতিবাদ জানাবেন দলীয় নেতারা, অন্যদিকে ঐ দিন রাহুল গান্ধী গুজরাট সফরে গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলবেন। পিছিয়ে নেই বামেরাও। তারও ওদিন নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পথে নামছেন।
তবে মোদী সরকারও হাত গুটিয়ে বসে নেই। বিরোধীদের আন্দোলনের পাল্টা জবাব দিতে নোট বাতিলের সাফল্যের প্রচারে ঘুঁটি সাজাচ্ছে তারাও। বোঝাই যাচ্ছে, আর দুদিন পরেই আবার সরগরম হয়ে উঠতে চলেছে ভারতীয় রাজনীতি।