স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে একসময়ের সাড়া জাগানো অনুষ্ঠান ‘ইন্ডিয়াস মোস্ট ওয়ান্টেড’-এর প্রযোজক-সঞ্চালক সুহেব ইলিয়াসির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল দিল্লির একটি আদালত।
সময়টা ১৯৯৯-২০০০ সাল। টিভিতে ‘ইন্ডিয়াস মোস্ট ওয়ান্টেড’ অনুষ্ঠানটি তখন সারা ভারতে শোরগোল ফেলে দিয়েছে। একটাও এপিসোড বাদ দিতে নারাজ মানুষজন। লোকমুখ ঘুরছে এই ক্রাইম সিরিজের কথা। সেই অনুষ্ঠানের মুখ্য সঞ্চালকের ভূমিকায় প্রথমেই চোখে পড়ত সুহেব ইলিয়াসিকে। কার্যত সূত্রধরের ভূমিকা নেওয়া সুহেব অনুষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গেই সারা ভারতের জনপ্রিয় মুখ হয়ে ওঠেন। আর ঠিক সেই সময়েই ২০০০ সালের ১১ জানুয়ারি দিল্লির বাড়িতে রক্তাক্ত আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার হন সুহেবের স্ত্রী বছর ৩০-এর অঞ্জু ইলিয়াসি।
দেহে অনেকগুলি ছুরি দিয়ে কোপানোর চিহ্ন ছিল। সেই অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি। পুলিশ এই ঘটনায় অঞ্জুর বাড়ির লোকজনের অভিযোগক্রমে সুহেব ইলিয়াসিকে গ্রেফতার করে। সুহেব দাবি করে অঞ্জু আত্মহত্যা করেছেন। অঞ্জু ইলিয়াসির পরিবারের অভিযোগ ছিল সুহেব ইলিয়াসি স্ত্রীয়ের ওপর পণের জন্য চাপ দিত। তাঁর ওপর অত্যাচার চালাত। হয়তো সেই কারণেই আত্মহত্যার পথ তাঁকে বেছে নিতে হয়। সুহেবের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা। এরপর ছাড়াও পেয়ে যায় সুহেব। কিন্তু কয়েক বছর পর অঞ্জুর পরিবারের মনে হয় আত্মহত্যায় প্ররোচনা নয়, পরিকল্পিতভাবেই তাঁদের মেয়েকে খুন করেছে জামাই সুহেব ইলিয়াসি।
খুনের মামলা চালু করার জন্য প্রথমে দিল্লির একটি নিম্ন আদালতে আবেদন করলেও তা খারিজ হয়ে যায়। পরে দিল্লি হাইকোর্ট এই আবেদনে সাড়া দিয়ে পূর্ব দিল্লির আদালতকে মামলা শুরুর নির্দেশ দেয়। ২০১৪ সালে শুরু হয় মামলা। তারই রায়ে এদিন আজীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হল সুহেব ইলিয়াসি।