৩ মাস আগে বৃদ্ধা মাকে ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে খুন করেছিল পেশায় অধ্যাপক ছেলে। অথচ পুলিশকে সে জানায়, মা অবসাদ থেকে আত্মহত্যা করেছেন। ৩ মাস পর তার সেই মিথ্যা ফাঁস হয়ে গেল একটা মাত্র ফোনের কারণে। গুজরাটের রাজকোট থানায় কিছুদিন আগে একজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির ফোন আসে। তিনি দাবি করেন, ওই অধ্যাপক মিথ্যা কথা বলছে। আত্মহত্যা নয়, অধ্যাপক নিজেই তার অসুস্থ মাকে খুন করেছে। এরপরে ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ।
অভিযুক্ত অধ্যাপকের আবাসনের সিসিটিভি ফুটেজ থেকে প্রমাণিত হয় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির দাবি মিথ্যা ছিল না। গুজরাটের রাজকোটের রামেশ্বর পার্কের বাসিন্দা সন্দীপ নাথওয়ানি বাস্তবেই ইচ্ছাকৃতভাবে খুন করেছে বৃদ্ধা মাকে। গত বছর ২৭ সেপ্টেম্বরের ফুটেজটিতে দেখা যাচ্ছে, অসুস্থ মাকে কোলে করে ছাদে নিয়ে যাচ্ছে ওই অধ্যাপক। কিন্তু কিছুক্ষণ পর ছাদ থেকে একাই নিচে নেমে আসে সে। এরপর হন্তদন্ত হয়ে নিজের ফ্ল্যাটে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। অথচ বয়ানে সে অন্য কথা জানিয়েছিল পুলিশকে। বলেছিল, সূর্যপুজো করতে মাকে নিয়ে ছাদে গিয়েছিল সে। মায়ের জন্য জল নিতে এক ফাঁকে নিচে নেমে আসে অভিযুক্ত। সেই সময় তার মা ছাদ থেকে ঝাঁপ দেন বলে দাবি করে সন্দীপ। কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজ তো বলছে অন্য কথা। একজন বৃদ্ধা যাঁর হাঁটাচলার ক্ষমতা পর্যন্ত নেই, তিনি কি করে ছাদ থেকে লাফ দেবেন? আর সন্দীপ ছাদ থেকে নেমে আসার পর জল নিয়ে তো ছাদে আর যায়নি!
সব মিলিয়ে পুলিশ নিশ্চিত হয়, ৩ মাস আগে তাঁদের মিথ্যা বয়ান দিয়েছিল অধ্যাপক সন্দীপ নাথওয়ানি। অভিযুক্ত অধ্যাপকের বৃদ্ধা মা আশা নাথওয়ানি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন। তার উপর পক্ষাঘাতের জন্য হাঁটাচলা করতেও অক্ষম ছিলেন তিনি। সম্ভবত অসুস্থ মায়ের সেবাযত্ন করতে করতে বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েছিল অভিযুক্ত সন্দীপ। সেই অবসাদ থেকে এমন নারকীয় হত্যাকাণ্ডটি সে ঘটিয়েছে বলে অনুমান পুলিশের।