গুরুগ্রামের প্রদ্যুম্ন ঠাকুর হত্যাকাণ্ডের আতঙ্কের ছায়া এবার উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ে। ২০১৭-য় রায়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের টয়লেটের সামনে পাওয়া গিয়েছিল প্রদ্যুম্নের গলাকাটা দেহ। পরীক্ষা পিছতে স্কুলের উঁচু ক্লাসের ছাত্র নির্মমভাবে প্রদ্যুম্নকে হত্যা করে বলে অভিযোগ ওঠে। সেই হত্যাকাণ্ডের রেশ কাটার আগেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল লখনউয়ের একটি নামকরা বেসরকারি স্কুলে। এবারে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। তবে প্রদ্যুম্নের মতো এবারে শেষ হয়ে গেল না আক্রান্ত ছাত্রের জীবন।
গত মঙ্গলবার ত্রিবেণীনগরের ব্রাইটল্যান্ড ইন্টার কলেজ স্কুলের শৌচাগারে ক্লাস ওয়ানের ছাত্রের উপর চড়াও হয় উঁচু ক্লাসের এক ছাত্রী। হৃতিক শর্মা নামের ছাত্রকে আচমকা সে মারতে শুরু করে বলে অভিযোগ। ছুরি দিয়ে হৃতিকের বুকে-পেটে-চোখে কোপাতে থাকে উঁচু ক্লাসের ‘দিদি’। তারপর রক্তাক্ত ছাত্রকে শৌচাগারে বন্ধ করে চম্পট দেয় সে। এমনটাই দাবি আহত ছাত্রের। পরে শৌচাগার থেকে রক্তাক্ত ছাত্রের গোঙানি শুনে তাকে উদ্ধার করেন স্কুলের এক শিক্ষক। গুরুতর আহত ছাত্রকে দ্রুত ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। খবর দেওয়া হয় আক্রান্ত ছাত্রের পরিবারকে। হাসপাতাল থেকে জখম ছাত্রকে এরপর নিয়ে যাওয়া হয় কিং জর্জ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির ট্রমা কেন্দ্রে। চিকিৎসার পর আহত ছাত্রের অবস্থা এখন স্থিতিশীল।
মঙ্গলবার তাড়াতাড়ি স্কুল ছুটি চেয়েছিল ছেলেদের মতো চুল কাটা ‘দিদি’। তাই হৃতিককে মারছিল সে। অভিযুক্ত ছাত্রী হৃতিককে মারার সময় সে কথা জানায় বলে দাবি আহত ছাত্রের। ছাত্র ও তার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে লখনউ পুলিশ। ক্লাস ওয়ানের ছাত্রের বিবরণ অনুযায়ী স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ওই ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছেন তদন্তকারীরা। এর আগেও স্কুলের মধ্যে অভিযুক্ত ছাত্রী অস্বাভাবিক আচরণ করেছে বলে তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ। স্কুলের ভিতর এমন নৃশংস ঘটনার পর কেটে গেছে ২৪ ঘণ্টা। অথচ পুরো ঘটনা সম্পর্কে পুলিশকে রাখা হয় সম্পূর্ণ অন্ধকারে। এই অভিযোগে ব্রাইটল্যান্ড ইন্টার কলেজ স্কুল কর্তৃপক্ষকে শো কজ করেছে পুলিশ। গত বুধবার থেকে স্কুল প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন অন্যান্য ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকরাও। স্কুলে বাচ্চাদের নিরাপত্তা আদৌ আছে কি? প্রশ্ন তুলছেন আতঙ্কিত মা-বাবারা।