বাড়ির বাইরে খাটিয়ার উপর বসে খোশমেজাজে গল্প করছিলেন ২ বৃদ্ধা। আচমকাই তাঁদের সামনে মৃত্যুদূতের মতো এসে হাজির হয় ৩ যুবক। বলা নেই, কওয়া নেই, ২ বৃদ্ধার একজনকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে থাকে ৩ দুষ্কৃতি। বৃদ্ধার মৃত্যু নিশ্চিত করতে পরপর ১০ বার পিস্তল গর্জে ওঠে দুষ্কৃতিদের। প্রথমে বৃদ্ধার বুকে গুলি করে ১ দুষ্কৃতি। অপর ২ দুষ্কৃতি বৃদ্ধার মাথা তাক করে পরপর গুলি ছুঁড়তে থাকে। ৬ বার গুলি খেয়ে রক্তাক্ত বৃদ্ধা যখন মৃত্যুযন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন, তখনও তাঁকে নিষ্কৃতি দেয়নি ৩ যুবক। গুলি শেষ হয়ে যাওয়ায় এক দুষ্কৃতি যখন পিস্তলে বারুদ ভরছিল, বাকি ২ জনের মধ্যে একজন পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে বৃদ্ধার মাথায় বেশ কয়েকবার গুলি ছোঁড়ে। পাশে বসে তখন ভয়ে থরথর করে কাঁপছেন দ্বিতীয় বৃদ্ধা। এবার কি তবে তাঁর পালা? যদিও দ্বিতীয় বৃদ্ধাকে নিয়ে বিন্দুমাত্র বিচলিত হতে দেখা গেল না দুষ্কৃতিদের। বরং তড়িঘড়ি তাঁকে ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করল অজ্ঞাতপরিচয় ৩ যুবক। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পুরো ঘটনাটি লেন্সবন্দি হয় বৃদ্ধার বাড়ির বাইরে লাগানো সিসিটিভিতে।
মৃত বৃদ্ধা নিচেত্তর কউরের স্বামী জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে খুন হন ২০১৬ সালে। সেই খুনের মামলায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়। বৃহস্পতিবার ছিল সেই মামলার শুনানি। যার অন্যতম সাক্ষী ছিলেন নিচেত্তর কউর ও তাঁর ছেলে। অভিযোগ, এই খুনের মামলার জন্য বেশ কয়েকবার অভিযুক্তদের পরিচিতদের তরফ থেকে প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছিলেন বৃদ্ধা ও তাঁর ছেলে। বুধবার শুধু বৃদ্ধাই নন, খুন হন তাঁর ছেলেও। বৃদ্ধার ছেলের দেহ একটি গাড়ির মধ্যে থেকে উদ্ধার করা হয়। খুনের মামলার সাক্ষ্য লোপাট করতেই বৃদ্ধা ও তাঁর ছেলেকে কি একইদিনে খুন হতে হল? নাকি নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পিছনে রয়েছে অন্য কোনও উদ্দেশ্য? ঘটনার তদন্তে নেমে সবদিক খতিয়ে দেখছে মেরঠ পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার ৩ দুষ্কৃতির মধ্যে ১ সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। খুনের মামলার প্রধান সাক্ষীদের যথাযথ নিরাপত্তা দিতে পারেননি ভারপ্রাপ্ত পুলিশকর্মীরা। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে ৫ পুলিশ আধিকারিককে বরখাস্ত করেছে মেরঠ প্রশাসন।