ক্লাস ভর্তি ছেলেমেয়ে। প্রত্যেকে নবম ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রী। জীববিজ্ঞানের শিক্ষিকা স্নেহলতা শঙ্খওয়ারের তত্ত্বাবধানে ভালোই চলছিল ‘কাউন্সিলিং’-এর ক্লাস। শিক্ষিকার অমূল্য পরামর্শ মন দিয়ে শুনতে ব্যস্ত পড়ুয়ারা। কেউ কেউ তো আবার ‘ম্যাডাম’-এর কথা ফোনে রেকর্ড করেও রাখছিল। যাতে তা পরে আবার শুনে অনুপ্রাণিত করে তোলা যায় নিজেকে।
জীবনে চলার পথে কি করা উচিৎ আর কি করা অনুচিত, তাই নিয়ে বক্তব্য রাখছিলেন শিক্ষিকা। বক্তব্যের মাঝেই একসময় এসে পড়ে দিল্লির ‘নির্ভয়া’ প্রসঙ্গ। মেয়েরা ছোটছোট জামাকাপড় পড়া, ঠোঁটে লিপস্টিক লাগানোর মানে নির্ভয়ার মতই ধর্ষণকে আহ্বান জানানো। এমন সাজপোশাক করলে নির্ভয়ার মতো তাদেরও ধর্ষণের মুখে পড়তে হবে। ‘সম্ভ্রম’-এর পাঠ দিতে গিয়ে একঘর ছাত্রের সামনে তাঁদের উদ্দেশ্যে একি বলে বসলেন শিক্ষিকা? বিস্ময়ের ঘোর কিছুতেই যেন কাটছিল না ছাত্রীদের। শিক্ষিকার এহেন কাণ্ডজ্ঞানহীন ‘সুপরামর্শে’ তখন ক্ষোভের মেঘ জমতে শুরু করেছে পড়ুয়াদের মনে। শিক্ষিকার ভাষণ শুনে হতবাক হয়ে যান পড়ুয়াদের মা-বাবারাও। তাই সোমবারই স্কুলে গিয়ে ‘নীতিবাগীশ’ শিক্ষিকার বিরুদ্ধে স্কুলের অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা। প্রমাণ হিসাবে শিক্ষিকার দেওয়া বক্তব্যের রেকর্ড তুলে দেওয়া হয় স্কুল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের হাতে।
অভিযুক্ত শিক্ষিকা মধ্যপ্রদেশের রায়পুরে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের জীববিজ্ঞান পড়ান। একজন শিক্ষিকা যাঁর কাজ পড়ুয়াদের সঠিক পথে চালনা করা, তিনি কিভাবে এই ধরণের কথা বলতেন পারেন? প্রশ্ন তোলেন পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা। অভিযুক্ত শিক্ষিকার অনৈতিক ভাষণকে একপ্রকার ‘মানসিক হেনস্থা’-র সমতুল্য বলে মনে করছে ক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রী। পড়ুয়াদের অভিযোগ ও বক্তব্যের ফোন রেকর্ড খতিয়ে দেখে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।