চায়ের সাথে বা শুধু মুখে, মুচমুচে পকোড়া জমে ভালো। পথ চলতে চলতে বা কাজের ফাঁকে নানা স্বাদের পকোড়া লোকজন দোকান থেকে কিনেই খেয়ে থাকেন। কিন্তু রাস্তাঘাটে পকোড়ার ডালা হাতে স্বয়ং বিক্রেতা যদি আপনার সামনে হাজির হয়? এমন সৌভাগ্যের সম্মুখীন সাধারণত হননি কেউই। সেই দৃশ্যই এবার দুচোখ ভরে দেখলেন বেঙ্গালুরুর বাসিন্দাদের একাংশ। গত রবিবার যাঁরা পথে বেরিয়েছিলেন, তাঁদের সামনে ডালায় করে গরম পকোড়া হাতে হাজির হলেন খোদ বিক্রেতারা। বাসের জানলার বাইরে তাকাতেই নিত্যযাত্রীদের চোখে পড়েছে সুগন্ধি পকোড়ার মোড়ক। বিনামূল্যে নয়, দাম দিয়ে সেই পকোড়া কিনেও খেলেন অনেকে।
‘বিরলতম’ সেই দৃশ্যের সাক্ষী অবশ্য হতে পারেননি গোটা বেঙ্গালুরুবাসী। ঠিক যেখানে রবিবার প্রধানমন্ত্রীর ‘ব়্যালি’ হওয়ার কথা ছিল, সেখানেই দেখা গেছে এমন ‘অদ্ভুত’ ছবি। একদল কলেজ পড়ুয়া হাতে সুস্বাদু পকোড়া নিয়ে পথচলতি মানুষকে চেখে দেখতে বলেছেন পকোড়ার স্বাদ। এমন পকোড়া বেঙ্গালুরুর পকোড়াপ্রেমীরা আগে কখনো চেখে দেখেননি। সে বিষয়েও আশ্বস্ত করছিল পড়ুয়ার দল। সেই পকোড়া বিক্রির অপরাধে জেলেও যেতে হয়েছে তাঁদের। এখন প্রশ্ন ওঠে, প্রকাশ্যে পকোড়া বিক্রি করা কী এমন অপরাধ যে তার জন্য জেলে যেতে হল পড়ুয়াদের?
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘তেলেভাজা শিল্প’ নিয়ে করা মন্তব্যে উত্তাল হয়ে উঠেছিল বাংলার রাজ্য রাজনীতি। এবার প্রধানমন্ত্রীর ‘পকোড়া’ নিয়ে ‘বিতর্কিত’ মন্তব্যের প্রতিবাদ জানাতে অভিনব প্রতিবাদের পথ বেছে নিল বেঙ্গালুরুর এক ঝাঁক পড়ুয়া। সম্প্রতি একটি টিভি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ‘পকোড়া’ বিক্রেতাদেরও ‘চাকুরীজীবী’ বলে ব্যাখ্যা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। লাভদায়ক ‘পকোড়া’ ব্যবসায় তরুণ প্রজন্মের যোগদানের কথা শোনা যায় প্রধানমন্ত্রীর মুখে। সেই নিয়েই তৈরি হয় বিতর্ক। তবে কি পকোড়া বিক্রি করে প্রতিদিন ‘২০০ টাকা’ রোজগার করে ‘চাকুরীজীবী’ হওয়ার পথে হাঁটবেন শিক্ষিত প্রজন্ম? দেশের প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিবাদ জানাতেই রবিবার পকোড়া হাতে পথে নামে বেঙ্গালুরুর একদল পড়ুয়া। ওইদিন বেঙ্গালুরুর প্যালেস গার্ডেন এলাকায় ছিল প্রধানমন্ত্রীর জনসভা। পরনে ডিগ্রিধারীর পোশাক, আর হাতে ‘মোদী পকোড়া’, ‘অমিত শাহ পকোড়া’। কর্ণাটকের বিজেপি সভাপতি ইয়েদুরাপ্পার নামের পকোড়াও ছিল ডালিতে। সেই সম্ভার বিক্রি করে বেঙ্গালুরুর মেহেক্রি সার্কেল এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিবাদ জানান ছাত্রছাত্রীরা। আর সেই ‘অপরাধ’-এ পরে পুলিশ এসে গ্রেফতার করে প্রতিবাদী পড়ুয়াদের।
এদিকে বিতর্কের মাঝেই সোমবার সংসদে বিষয়টি সামনে আনেন খোদ অমিত শাহ। রাজ্যসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজেপি সভাপতি বলেন, তিনি মনে করেন বেকার থাকার চেয়ে পকোড়া বিক্রি ঢের ভাল।