সঞ্জয় লীলা বনশালির ‘পদ্মাবত’ করণী সেনার ‘অগ্নিপরীক্ষা’-য় উতরে গেছে। তবে তার আগে হুলুস্থুলু হয়ে গেছে। পদ্মাবত ঘিরে সেই উত্তাল পরিস্থিতি শান্ত হতে না হলেই ফের বলিউডের আর একটি সিনেমা ঘিরে পারদ চড়তে শুরু করল। রাজস্থানের ব্রাহ্মণ সংগঠনের রোষের মুখে পড়ল কঙ্গনা রানাওয়াত অভিনীত ‘মণিকর্ণিকা’।
সন ১৮৫৩। ব্রিটিশ শাসিত ভারতবর্ষের সাম্রাজ্যবাদী শাসক লর্ড ডালহৌসি অন্যায় যুদ্ধে দখল করে নেন ‘ঝাঁসি’। অবশ্য নিজের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে যুদ্ধে লড়াই করে গিয়েছিলেন রানী লক্ষ্মীবাঈ ওরফে মণিকর্ণিকা। যুদ্ধে হেরে গেলেও দেশপ্রেমী মণিকর্ণিকার বীরত্বের কাহিনি ভোলেনি ইতিহাস। মণিকর্ণিকার সেই গৌরবগাথাই এবার বড় পর্দায় আনতে চলেছেন পরিচালক কৃষ। কিন্তু ছবি মুক্তির আগেই বিতর্কের রাহুগ্রাসে পড়তে হল ‘মণিকর্ণিকা’-কে। বিতর্ক ছবির একটি গানের দৃশ্যকে ঘিরে। ছবিতে ঝাঁসির রানির সাথে এক ব্রিটিশ ব্যক্তির প্রেমের দৃশ্য দেখানো হয়েছে, এই অভিযোগে সরব হয়ে উঠেছে রাজস্থানের একটি ব্রাহ্মণ সংগঠন।
কৃষ পরিচালিত ‘মণিকর্ণিকা’-র গল্প সাজানো হয়েছে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক ব্রিটিশ লেখিকার বইয়ের তথ্যের আধারে। বইয়ে লেখিকা জয়শ্রী মিশ্র রানি লক্ষ্মীবাঈয়ের সাথে ব্রিটিশ কর্মচারি রবার্ট এলিসের প্রেমের সম্পর্ককে দেখিয়েছেন। বাস্তবে যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি সর্ব ব্রাহ্মণ মহাসভার। বইটি ২০০৮ সালে উত্তরপ্রদেশ সরকার ব্যান করে। সেই ‘ব্যানড’ বইয়ের ওপর ভিত্তি করে কি করে ‘মণিকর্ণিকা’র চিত্রনাট্য লেখা হল? প্রশ্ন তুলেছেন সর্ব ব্রাহ্মণ মহাসভার সদস্যরা। বীরাঙ্গনা ঝাঁসির রানি শুধু ব্রাহ্মণ সম্প্রদায় নয়, দেশেরও গর্ব। তাঁর চরিত্রকে কালিমালিপ্ত করলে তা কিছুতেই মেনে নেওয়া হবে না। প্রয়োজনে ‘মণিকর্ণিকা’-র শুটিং বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে ছবি নির্মাতাদের আগাম সতর্ক করে দিয়েছে রাজস্থানের ব্রাহ্মণ সংগঠন।
‘মণিকর্ণিকা’-র চিত্রনাট্য দেখতে চেয়ে জানুয়ারি মাসে পাঠানো হয়েছিল চিঠি। বেশ কিছুদিন পার হয়ে গেলেও আসেনি কোনও জবাব। যা নিয়ে রীতিমত ক্ষোভে ফুঁসছেন রাজস্থানের ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয়রা। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে করণী সেনাও। তাঁদের দাবি না মানলে ‘পদ্মাবত’-এর মতই দুর্ভোগ পোহাতে হবে ‘মণিকর্ণিকা’-কেও, সে ব্যাপারে আগে ভাগেই ছবির প্রযোজনা সংস্থাকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে সর্ব ব্রাহ্মণ মহাসভা।
(ছবি – সৌজন্যে – ইন্সটাগ্রাম)