National

নাবালকের দেহ মিলল পড়শির বাক্সে, দেহের ওপর ছড়ানো মরা ইঁদুর!

৩৭ দিন আগে বাড়ি থেকে বেপাত্তা হয়ে গিয়েছিল ৭ বছরের আশিস সাইনি। দিল্লির স্বরূপনগর এলাকায় তার বাড়ি। ১ মাস ধরে তার খোঁজে দিল্লির অলিতেগলিতে তল্লাশি চালিয়ে গেছে দিল্লি পুলিশ। পুলিশের সাথে সাথে ছেলেকে হন্যে হয়ে খুঁজে যাচ্ছিলেন বাড়ির লোকও। রক্তের সম্পর্ক না থাকলেও, নিখোঁজ ভাইপোকে খুঁজে পেতে চেষ্টা চালাচ্ছিল পড়শি কাকু। সে নাকি আবার গোয়েন্দা দফতরের একজন উচ্চপদস্থ কর্তা। তাই নিজেকে সিবিআই অফিসার বলে দাবি করা অবধেশ শাক্যকে চোখ বুজে ভরসাও করেছিল নিখোঁজ নাবালকের পরিবার। সেই ভরসা করা যে কত বড় ভুল ছিল, তা তাঁরা বুঝতে পারলেন গত মঙ্গলবার। ১ মাস যাবৎ যে ভাইপোর খোঁজে ছোটাছুটি করে বেড়িয়েছে, প্রমাণ খুঁজে বেড়িয়েছে, সে নিজেই বাচ্চাটির হত্যাকারী! এই কথা এখনও ঠিক বিশ্বাস করে উঠতে পারছেন না মৃত নাবালকের মা-বাবা।

গত ৭ জানুয়ারি বাড়ি থেকে বেরনোর পর গায়েব হয়ে যায় ওই নাবালক। নিখোঁজ নাবালকের বাড়ির লোক থানায় গিয়ে একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। তাঁদের পাশে সেদিন ছিল প্রতিবেশি অবধেশ শাক্য নামে ১ যুবক। ওই যুবকের সাথে নিখোঁজ আশিস সাইনির বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। থানায় অভিযোগ জানানোর পরও তাই নিখোঁজ ভাইপোকে খোঁজার চেষ্টা থেমে থাকেনি পড়শি কাকুর। মৃত নাবালকের পরিবারের দাবি, কখনও নাবালকের নিখোঁজ রহস্যের ক্লু হিসেবে মদের বোতল, রুমাল আর চিপসের প্যাকেট সে তুলে দিয়েছে পরিবারের হাতে। কখনও বা আশিসের অপহরণকারীদের ফোনের সিগনাল পাওয়ার ‘ধাপ্পা’ দিয়ে সে নিজের বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করেছে। এমনকি নিখোঁজ নাবালকের প্রতিবেশিদের বাড়িতে তদন্তের সময় পুলিশকে সে যথেষ্ট সাহায্যও করেছে। কিন্তু নিজের ভাড়া বাড়ির চৌহদ্দিতে পুলিশের ছায়া এতদিন পড়তে দেয়নি সে। মৃত আশিস সাইনির বাবার দাবি, মাঝখানে একবার পরিচিত অবধেশের বাড়ি গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে একটা কটু গন্ধ তাঁর নাকে এসেছিল। কটু গন্ধটা নাকি ইঁদুর মরা গন্ধ। এই কথা বলে সেদিন নিজের সারা ঘরে অবধেশ সুগন্ধি স্প্রে ছড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ মৃতের বাবার।


মঙ্গলবার দিল্লির নাথুপুরার সেই ভাড়া বাড়িতেই হানা দেয় দিল্লি পুলিশ। গত ৭ জানুয়ারির একটি সিসিটিভি ফুটেজ হাতে পাওয়ার পরই সন্দেহ দূর হয় পুলিশের। আশিস ওইদিন যার কাছে গিয়েছিল, সেই কাকু অবধেশ শাক্যের সাথেই জড়িয়ে আছে নাবালকের অন্তর্ধান রহস্য। এরপরেই পুলিশ গিয়ে পৌঁছয় নাবালকের ‘পাতানো’ কাকুর বাড়িতে। সেখানেই ঘরের খাটের তলা থেকে উদ্ধার হয় বাক্সবন্দি নাবালকের পচনধরা দেহ। বাক্স খুলে দেখা যায়, নাবালকের দেহের উপর ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে অনেকগুলি মরা ইঁদুর। যাতে ইঁদুরপচা গন্ধে ঢাকা পড়ে যায় মৃত মানুষের পচা গন্ধ। এত বুদ্ধি প্রয়োগ করেও অবশ্য শেষ পর্যন্ত পার পেল না হত্যাকারী। নাবালককে অপহরণ ও খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় অবধেশকে। পুলিশি জেরায় সে স্বীকার করে আশিসকে খুনের কথা। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, মৃত নাবালকের পরিবারের কোনও মহিলার সঙ্গে সম্ভবত অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল অবধেশ। সেই সম্পর্কের জেরে আশিস সাইনিকে খুন হতে হল কিনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।


Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button