পুরুষ ‘কৃষ্ণ’ সেজে ফেসবুকে প্রেমলীলার জাল পেতেছিল ১ মহিলা ‘কৃষ্ণা’। ২০১৩ সালে ফেসবুকে পুরুষ হিসেবে প্রোফাইল তৈরি করে সে। পুরুষের ভঙ্গিমায় তোলা বেশ কিছু ছবি আপলোডও করে। তারপরে বিভিন্ন মেয়ের সাথে ফেসবুকেই বন্ধুত্ব পাতায় কৃষ্ণ ওরফে সুইটি। উদ্দেশ্য ছিল, বন্ধুত্বকে ছাদনাতলা অবধি নিয়ে যাওয়া। তাহলে বিয়ের সূত্রে আদায় করা যাবে মোটা টাকার পণ। পুরুষরূপী সুইটির পাতা ফাঁদে পা দেন ২ যুবতী। উত্তরাখণ্ডের কাঠগোদাম এলাকার ১ যুবতীর সাথে পরিচয় হয় সুইটির। সোশ্যাল মিডিয়ায় হওয়া প্রেম গড়ায় বিয়ের মণ্ডপ পর্যন্ত।
নিজেকে ব্যবসায়ীর ছেলের পরিচয় দিয়ে শিক্ষিত ওই যুবতীকে ২০১৪ সালে বিয়ে করে কৃষ্ণ ওরফে সুইটি। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীকে মারধর করত ছদ্মবেশী স্বামী। লাগাতার অত্যাচার করে প্রথম স্ত্রীর বাপের বাড়ি থেকে সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা আদায় করে সে। পণের লোভে আবার ১ মহিলাকে বিয়ে করে সুইটি। প্রথম স্ত্রীর বিয়ের অনুষ্ঠানে আসা একটি মেয়েকে প্রেমের ফাঁদে জড়ায় সে। তারপর ২০১৬ সালে তাকে বিয়ে করে দ্বিতীয় সংসার পাতে তিকোনিয়া এলাকায়। বিয়ের কিছুদিন পরেই দ্বিতীয় স্ত্রী জানতে পারেন স্বামীর লিঙ্গ পরিচয়ের রহস্য। কিন্তু অনেক টাকা দিয়ে তার মুখ বন্ধ করে রাখে অভিযুক্ত কৃষ্ণ সেন।
অভিযোগ, দ্বিতীয় স্ত্রীর টাকার চাহিদা মেটাতে প্রথম স্ত্রীর ওপর ফের পণের জন্য অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় নকল স্বামী। সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন প্রথম স্ত্রী। গত বুধবার অভিযুক্ত কৃষ্ণ ওরফে সুইটিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের জেরার মুখে নিজের আসল লিঙ্গ পরিচয়ের কথা স্বীকার করে সে। জানায়, ছোটবেলা থেকেই নিজেকে ছেলে বলে ভাবতে ভালবাসত সে। বিয়ে করলেও নিজের পরিচয় লুকোতে স্ত্রীদের শরীর স্পর্শ করতে দেয়নি সে। শারীরিক সম্পর্কের জন্য তাই সেক্স টয় হয়ে উঠেছিল তার অস্ত্র। জেরার মুখে প্রথম স্ত্রীকে পণের জন্য নির্যাতনের কথাও স্বীকার করেছে সুইটি। স্বীকারোক্তির পর অভিযুক্তের লিঙ্গ নির্ধারণ পরীক্ষা করা হয়। চিকিৎসকেরা কৃষ্ণ ওরফে সুইটির নারী হওয়ার বিষয়টি সুনিশ্চিত করেন। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রতারণা, পণের জন্য স্ত্রীর উপর অত্যাচার ইত্যাদি একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।