আর কয়েক ঘণ্টা পেরোলেই নতুন দাম্পত্য জীবনে প্রবেশ করতে যাচ্ছিলেন নরেশ পাল গঙ্গবার। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার যুবক দিল্লির নয়ডায় একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন। বিয়ের জন্য কিছুদিন আগে উত্তরপ্রদেশের বরেলির বাড়িতে আসেন তিনি। গত রবিবার ছিল তাঁর জীবনের বিশেষ দিন। ওই দিন শাহাজানপুরের বাসিন্দা উমা গঙ্গবারের সাথে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু বিকেলের আগেই সানাইয়ের সুর থেমে গেল হবু বর ও তাঁর হবু কনের বাড়িতে। বিয়ের পিঁড়িতে বসার আগেই শোকে বিহ্বল বরযাত্রীর আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠল বরেলির নন্দোসি গ্রামের উৎসবমুখর বাড়ি। একই অবস্থা শাজাহানপুরের হবু পাত্রীর বাড়িরও।
গত রবিবার বাড়ির ছেলের বিয়ে নিয়ে চলছিল শেষ মুহুর্তের তোড়জোড়। সকাল ৯টার দিকে একটি ফোন আসে যুবকের কাছে। ফোনটি এসেছিল সহকর্মীর কাছ থেকে। কাজের ফোন। অথচ বাড়ির ভিতর চিৎকার চেঁচামেচি হইচইয়ের জন্য সহকর্মীর কথা ভালো করে শোনা যাচ্ছিল না। তাই ফোন নিয়ে বাধ্য হয়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে যান ওই যুবক। ফোনে কথা বলতে বলতে বাড়ির কাছে রেললাইনের ধারে পৌঁছে যান তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ফোনে কথা বলতে বলতে অন্য আরেকটি ফোনে মেসেজ পাঠাতে ব্যস্ত ছিলেন নরেশ। ওই অবস্থায় রেললাইন পার হতে যান তিনি। সেইসময় ওই স্থান দিয়ে রাজ্যরানি এক্সপ্রেস দুরন্ত গতিতে ছুটে আসছিল। ফোনে মগ্ন থাকায় ঘাড়ের কাছে এসে পড়া ট্রেনের হুইসল খেয়াল করেননি নরেশ। ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় হবু পাত্রের। বিকেলে যাঁর ছাদনাতলায় যাওয়ার কথা ছিল, সেই মেধাবী কর্মঠ যুবককে কিনা নিয়ে যেতে হল শ্মশানে! মর্মান্তিক শোকের সেই ঘোর এখনও কাটিয়ে উঠতে পারছেন না মৃতের পরিবার থেকে পাত্রীর পরিবার।