পশুর চেয়েও অধম ধর্ষকদের শাস্তি দিতে গত সোমবার থানায় হামলা চালাল উন্মত্ত জনতা। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ অরুণাচল প্রদেশের লোহিত তেজু থানায় তখন চূড়ান্ত ব্যস্ততা পুলিশকর্মীদের মধ্যে। এমন সময় থানার সামনে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন প্রায় ৮০০ জন মানুষ। তাঁদের হাতে তুলে দিতে হবে ধর্ষণে অভিযুক্ত ২ ব্যক্তিকে। যারা গত ১২ ফেব্রুয়ারি নৃশংসভাবে ধর্ষণ করে খুন করেছে ৫ বছরের এক শিশুকন্যাকে। মৃত শিশুটির বাড়ি অরুণাচল প্রদেশের নামগো মিসিং গ্রামে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে নিখোঁজ ছিল সে। ৫ দিন পর গত ১৭ ফেব্রুয়ারি চা বাগানের ঝোপের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় শিশুটির গলাকাটা দেহ। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে অসমের ২ চা বাগান কর্মী পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। গত সোমবার অসমের টেঙ্গাপানি গ্রাম থেকে অভিযুক্ত সঞ্জয় সুবুর ও জগদীশ লোহারকে গ্রেফতার করা হয়। জেরায় শিশুটিকে ধর্ষণ করে খুনের কথা স্বীকার করে তারা। গতকাল অভিযুক্ত ২ ব্যক্তি তেজু থানায় হাজতে ছিল। সেই খবর গিয়ে পৌঁছয় মৃত শিশুর গ্রামে। ধর্ষকদের উচিত শাস্তি দিতে তিলমাত্র দেরি না করে তেজু থানায় হাজির হন কয়েক শো গ্রামবাসী। অভিযুক্তদের তাদের হাতে তুলে দেওয়া হোক, এই দাবিতে থানা ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা।
কিন্তু আইন এভাবে হাতে তুলে নেওয়া যায় না। প্রবল আক্রোশে ফুটতে থাকা জনতাকে সে কথা বোঝানোর চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু পুলিশের কোনও কথাই কানে তুলতে চাননি উপস্থিত মানুষজন। পুলিশের ঘেরাটোপ পার হয়ে সোমবার থানার ভিতরে জোর করে ঢুকে পড়েন তাঁরা। লকআপ ভেঙে টানতে টানতে অভিযুক্তদের বার করে আনা হয় থানার বাইরে। তাদের উলঙ্গ করে স্থানীয় বাজার এলাকায় প্রথমে ঘোরানো হয়। তারপর অভিযুক্তদের ওপর নেমে আসে ক্ষিপ্ত জনতার সম্মিলিত লাথি ঘুষি চড়। যার হাতে যা ছিল তাই দিয়ে ওই ২ চা শ্রমিককে পিটিয়ে রাস্তার মাঝখানে ফেলে দেয় জনতা। পরে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে ২ জনের দেহ। উত্তেজিত জনতার মারে ২ অভিযুক্তের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত কাউকে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।