বিগত কয়েকবছর ধরেই স্কুলে ভয়ে ভয়ে যেতে হচ্ছিল একাদশ শ্রেণির ছাত্রী পূজা পানিকাকে। মধ্যপ্রদেশের অনুপপুর এলাকার কোটমা গ্রামেই তার বাড়ি। সেই গ্রামেই তার স্কুল। স্কুলে যাওয়ার পথে এক যুবকের প্রেম প্রস্তাবে রীতিমত তিতিবিরক্ত হয়ে উঠেছিল পূজা। গত বৃহস্পতিবার স্কুলে যাওয়ার সময় যুবককে দেখতে না পেয়ে তাই একটু নিশ্চিন্তই হয় সে। কিন্তু তার মনের ভুল দূর হয়ে যায় স্কুলের দোরগোড়ায় পৌঁছতেই। বেলা তখন সাড়ে ১২টা হবে। স্কুলে বায়োলজির প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস আছে। তাই তাড়াতাড়ি পা চালিয়ে স্কুলে ঢুকতে যাচ্ছিল কিশোরী পড়ুয়া। এমন সময় মূর্তিমান যম হয়ে তার পথ আটকে দাঁড়ায় সেই যুবক।
পুলিশের অনুমান, কিশোরী বারবার ফিরিয়ে দিচ্ছিল যুবকের প্রেমের প্রস্তাব। সেই প্রত্যাখ্যান মেনে নিতে পারেনি সে। প্রবল আক্রোশ থেকে তাই ওই যুবক কিশোরীকে উচিত শাস্তি দিতে চেয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার সেই শাস্তির খাঁড়া একাদশ শ্রেণির ছাত্রীটির ওপর মারাত্মক চেহারায় নেমে আসে। প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান অনুসারে, দিনেদুপুরে স্কুলের দরজার মুখে ওই যুবক আচমকা হামলা চালায় ছাত্রীর উপর। চোখের নিমেষে তলোয়ার দিয়ে ছাত্রীর গলা কেটে দেয় অভিযুক্ত। তারপর ঘটনাস্থলেই তলোয়ার ফেলে এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয় ওই যুবক। মুহুর্তের মধ্যে এমন নারকীয় হত্যাকাণ্ড দেখে তখন রীতিমত থ বনে গেছেন ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে দাঁড়ানো স্কুলের এক শিক্ষক। ভয়ানক ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে তিনি বাকিদের খবর দেন। স্কুল কর্তৃপক্ষ খবর দেয় পুলিশে। স্কুলের সামনে ছাত্রীকে কোপানোর কথা ততক্ষণে সারা স্কুলে ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়। স্কুলের সামনে থেকে পুলিশ এসে ছাত্রীর রক্তাক্ত নিথর দেহ উদ্ধার করে। তারপরেই স্কুল থেকে বাকি ছাত্রীদের বাইরে বার হওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীর মৃত্যুর খবর দেওয়া হয় তার পরিবারকে। দিলীপ সাহু নামে ওই যুবকের বিরুদ্ধে মৃতার পরিবার থানায় অভিযোগ দায়ের করে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত দিলীপ সাহুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।