দেশের শিক্ষার হারে নাকি সবচেয়ে এগিয়ে কেরালা। খতিয়ান তো তাই বলে। সেই শিক্ষিত রাজ্যের এক গ্রামের যে ঘটনা সামনে এল তা আদিম বর্বরতাকে হার মানাতে পারে। কেরালার পালাক্কাড় জেলার একটি জঙ্গল ঘেঁষা গ্রামে বেশ কিছুদিন ধরেই চুরি হচ্ছিল। চুরি হচ্ছিল মূলত দোকান থেকে। গ্রামবাসীদের দাবি এই চুরি করছিল পাশের জঙ্গলে থাকা এক আদিবাসী ভবঘুরে যুবক। সেই অভিযোগে তাকে ধরে ফেলেন গ্রামবাসী। গামছা দিয়ে বাঁধা হয়। তারপর শুরু হয় বেধড়ক মার। এরমাঝেই কিছু ‘রসিক’ ব্যক্তি সেই মারধরের সঙ্গে নিজের সেলফি তুলে ফেলেন টপাটপ। হাসি মুখে ব্যাকগ্রাউন্ডে মার খেতে থাকা ওই যুবককে রেখে তোফা ছবি ওঠে মোবাইলে। সেসব ছবি ছড়িয়েও পড়ে বিভিন্ন সোশ্যাল সাইটে। আর তা দেখার পরই ছি ছি পড়ে যায় সর্বত্র।
শীর্ণ দেহের ওই বছর ২৭-এর ভবঘুরে যুবককে এভাবে বেঁধে অত্যাচার চলে বেশ কিছুক্ষণ। ‘শাস্তি’ বলে কথা! চুরির শাস্তি! এরমাঝেই গ্রামের কেউ পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে তাঁকে যখন উদ্ধার করে তখন তার অবস্থা বেশ খারাপ। পুলিশের গাড়িতেই বমি করতে থাকেন ওই শীর্ণ যুবক। দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে হতভাগ্য ‘চোর’-কে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
এই ঘটনার কড়া ভাষায় নিন্দা করেছেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যেই পুলিশ এই ঘটনায় ৭ জনকে চিহ্নিত করেছে। এদিকে এই ঘটনার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছিছিক্কার পড়ে গেছে। একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে সভ্যতার বড়াই করা সমাজের কাছ থেকে এই আদিমতাই কি প্রাপ্য ছিল? প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।