স্কুল ছুটি হয়ে গিয়েছিল। স্কুল থেকে বেরিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিল পড়ুয়ারা। কিন্তু রাস্তা আর পার করা হল না তাদের। বেপরোয়া গাড়ি কেড়ে নিল ৯ পড়ুয়ার জীবন। গাড়ির ধাক্কায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় ২৪ জন পড়ুয়া ভর্তি হাসপাতালে।
শনিবার, তাই হাফ বেলা স্কুল। দুপুর ১টা বাজতেই ছুটির ঘণ্টা বেজে গিয়েছিল ধর্মপুর মিডল স্কুলে। বিহারের মুজফফরপুর জেলার আহিয়াপুর গ্রামের ৭৭ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারেই এই সরকারি স্কুলটির অবস্থান। ছুটির ঘণ্টা বাজতেই স্কুল থেকে বেরিয়ে রাস্তা পার হতে যাচ্ছিল জনা ৩০ পড়ুয়া। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, আচমকাই পড়ুয়াদের ঘাড়ের ওপর উঠে পড়ে দুরন্ত গতির একটি বোলেরো গাড়ি। পড়ুয়াদের ধাক্কা মেরে গাড়ি সোজা গিয়ে রাস্তার পাশে ১টি গাছে ধাক্কা মারে। দুর্ঘটনার পরেই গাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় চালক।
চোখের সামনে নিমেষের মধ্যে সমস্ত ঘটনা ঘটতে দেখে থতমত খেয়ে যান স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনার আকস্মিকতায় ঘাবড়ে যায় রাস্তা পার হতে যাওয়া বাকি পড়ুয়া ও তাদের অভিভাবকরা। বিস্ময়ের ঘোর কাটতেই রাস্তার ওপর ৩৩ জন পড়ুয়ার রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন এলাকাবাসী। রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার ওপর পড়ুয়াদের দেহাংশও নজরে পড়ে। রাস্তার ওপর তখন কাতরাচ্ছে বেশ কিছু পড়ুয়া। কিছু দেহ নিথর। দ্রুত গুরুতর জখমদের ভর্তি করা হয় নিকটবর্তী হাসপাতালে। কিন্তু ততক্ষণে নিভে গেছে ৯ পড়ুয়ার হৃৎপিণ্ড। হাসপাতালে তাদেরকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। পুলিশ পরে ঘাতক গাড়িটিকে উদ্ধার করতে এলে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পরে। ঘাতক গাড়ির চালকের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে ৭৭ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ করে ক্ষোভ উগড়ে দিতে থাকেন ক্ষিপ্ত জনতা। পরে পুলিশের আশ্বাসে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেন। ক্ষতিপূরণ বাবদ মৃত পড়ুয়াদের পরিবার পিছু ৪ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। ঘাতক বেলাগাম বোলেরোর চালকের সন্ধানে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।