দিল্লির এক কলেজ ছাত্রীকে লক্ষ্য করে বীর্য ভরা বেলুন ছুঁড়েছিল কয়েকজন যুবক। প্রবল ক্ষোভের সঙ্গে সেকথা ওই ছাত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেন। পুলিশেও অভিযোগ দায়ের করেন। তবে ওই ছাত্রী বলেই নয়, তিনি সাহস করে বিষয়টি সামনে আনার পর অনেক ছাত্রীই জানিয়েছেন দিল্লির ওই অঞ্চলে হোলির অছিলায় কন্ডোমও তাঁদের দিকে ছুঁড়ে দেওয়া হয়। যদিও ছাত্রীদের দাবি দিনের পর দিন এমন চলছে আর পুলিশ হাত গুটিয়ে বসে আছে। দিল্লির ওই ছাত্রী বীর্যভরা বেলুন ছোঁড়ার বিষয়টি সামনে আনার পর বৃহস্পতিবার দিল্লির জেসাস এন্ড মেরী কলেজের ছাত্রীরা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে দিল্লি পুলিশের সদর দফতররে সামনে বিক্ষোভে সামিল হন।
দিল্লির অমর কলোনি বাজার এলাকায় হোলির এক সপ্তাহ আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় অকাল হোলি। রঙভরা বেলুন পথচারীদের গায়ে ফাটিয়ে দারুণ আনন্দ করেন সেখানকার লোকজন। অভিযোগ রঙের বদলে অনেকসময় বেলুনের ভিতর ঢালা হয় বীর্য। বেছে বেছে মেয়েদের দিকেই সেই বেলুন ছুঁড়ে মারা হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় হোলির সেই কদর্য রূপকে সামনে নিয়ে আসেন এক ছাত্রী। তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের লেডি শ্রী রাম কলেজের পড়ুয়া।
এই প্রতিবাদ, আন্দোলন তাঁরই সাহসিকতার ফল। ওই ছাত্রীর অভিযোগ, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ওই তিনি দিল্লির অমর কলোনি বাজারে যান। সেখানে একটি ক্যাফেতে বন্ধুর সাথে খেতে গিয়েছিলেন তিনি। তরুণীর দাবি, রিকশা করে ফেরার পথে কয়েকজন যুবক তাঁর গায়ে বেলুন ছোঁড়ে। বেলুনের ভিতরের সাদাটে তরলের দাগ লেগে যায় তাঁর প্যান্টে। হোলির আনন্দে একদল ছেলে দুষ্টুমি করে আনন্দ করছে। এইভেবে কিছু না বলে ওই এলাকা ছেড়ে হস্টেলে ফিরে আসেন ওই ছাত্রী। হস্টেলে ফিরে বাকি বান্ধবীদের প্যান্টে লাগা রঙ দেখান তিনি। জানতে পারেন, প্যান্টে লাগা বস্তুটি আসলে কোনও রঙ নয়, ওটা আসলে বীর্য। বান্ধবীদের থেকে এই কথা শোনার পর ঘেন্নায় রাগে ফেটে পড়েন ওই ছাত্রী।
তিনি আরও জানতে পারেন, প্রতি বছরই নাকি ওই এলাকায় বীর্যভরা বেলুন দিয়ে চলে এহেন অশালীন হোলি। যার ভুক্তভোগী হতে হয়েছে ছাত্রীটির অন্যান্য বান্ধবীদেরও। এমন নোংরা খেলায় মেতে ওঠে এলাকারই অজ্ঞাতনামা যুবকের দল। এই কথা শুনে নিজেকে স্থির রাখতে পারেননি ওই ছাত্রী। সোশ্যাল মিডিয়ায় পুরো ঘটনার কথা জানিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন তিনি। তাঁর দাবি, বছর বছর মেয়েদের সাথে এইভাবে হোলির নামে নোংরামি চলছে। সেই বিষয়ে এলাকার লোকজন যথেষ্ট অবগত। তারপরেও কেউ এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদ করেননা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাত্রীর পোস্টটি নজরে আসতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় স্থানীয় প্রশাসনিক মহলে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বস্ত করে পুলিশ। তারপর এদিন দিল্লি পুলিশের সদর দফতরের সামনে ছাত্রী বিক্ষোভ পুলিশের ওপর চাপ আরও বাড়াল।