ঘড়ির কাঁটায় তখন রাত আড়াইটে। রাজধানীর মুখার্জী নগর এলাকার বাসিন্দারা তখন গভীর ঘুমে মগ্ন। আচমকা বিকট একটা শব্দে ঘুম ভেঙে যায় কয়েকজন এলাকাবাসীর। শব্দের উৎসের সন্ধানে রাস্তায় নেমে মুহুর্তে ঘুমের রেশ কেটে যায় সকলের। অবাক চোখে দেখেন, রাস্তার ধারে পড়ে রয়েছে একটি দুমড়েমুচড়ে যাওয়া সাদা হুন্ডাই গাড়ি। গাড়ির ভিতর থেকে কোনওরকমে বাইরে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন এক গুরুতর জখম তরুণী। ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে সাথে সাথে তরুণীকে সাহায্য করতে এগিয়ে যান উপস্থিত লোকজন। দেখেন, তরুণী একা নন, গাড়ির ভিতরে পড়ে কাতরাচ্ছেন আরও ৫ জন। তাঁদের প্রত্যেককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয় লোকজন। ২ তরুণকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। মৃতদের মধ্যে সিদ্ধার্থ সিং নামে এক তরুণ মহারাজা সূরজমল ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির ছাত্র। রিতেশ দাহিয়া নামে অপর তরুণ দিল্লির শ্রী ভেঙ্কটেশ্বর কলেজের পড়ুয়া।
ঘটনার তদন্তে নেমে দুর্ঘটনার কবলে পড়া গাড়িটিকে বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। গাড়ির ভিতর থেকে বেশ কয়েকটি মদের বোতল ও প্লাস্টিকের কাপ উদ্ধার করে তারা। পুলিশের অনুমান, গভীর রাতে শুনশান দিল্লির রাজপথে ট্রাফিক পুলিশের কড়া নজরদারি অতটা থাকে না। সেই সুযোগে পক্ষীরাজের গতিতে গাড়ি ছুটিয়ে যাচ্ছিলেন মদ্যপ দীক্ষা দাদু নামে এক তরুণী। গাড়ির ভিতর তখন মত্ত অবস্থায় আনন্দে মেতে উঠেছিলেন তাঁর আরও ২ বান্ধবী। যাঁরা প্রত্যেকেই দিল্লি অ্যামিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের পড়ুয়া। ৩ বান্ধবীর সঙ্গে লাগামহীন গতির উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেছিলেন ওই ২ তরুণ। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, নেশার ঘোরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একসময় গাড়িটি সোজা গিয়ে ধাক্কা মারে রাস্তার ধারে ডিভাইডার। তারপর সেখান থেকে রাস্তার ধারের ট্রাফিক সিগনালে গিয়ে ধাক্কা মারে হুন্ডাই গাড়িটি। সবশেষে ডিগবাজি খেয়ে রাস্তার ওপরেই মুখ থুবড়ে পড়ে। ঘটনার তদন্তে নেমে গাড়ির চালক আহত তরুণীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।