সোশ্যাল মিডিয়া এখন কাঁপাচ্ছে একজন। নাম তার ‘তরমুজ’। কখনো বা আস্ত, আবার কখনো বা দু-টুকরো। যা হাতে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হয়ে চলেছে একের পর এক তরুণীর ছবি। সেইসব ছবিতে লাইক আর কমেন্টের সংখ্যাও বাড়ছে হুহু করে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তরমুজ হাতে ছবি তোলার এই নয়া ট্রেন্ডের আমদানি হল কি ভাবে? কোথা থেকে, কি কারণে জন্মাল এই ট্রেন্ড? সাধারণ মানুষের কাছে ‘তরমুজ’ গ্রীষ্মের মরসুমি ফল মাত্র। তবে সুস্বাদু এই ফলই এখন হয়ে উঠেছে কেরালার প্রতিবাদী পড়ুয়াদের ‘ডিজিটাল বিক্ষোভ’-এর বড়সড় অস্ত্র। সেই অস্ত্রের ব্যবহার করা হচ্ছে কেরালার ফারুক ট্রেনিং কলেজের সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপকের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওকে কেন্দ্র করে গোটা ঘটনার সূত্রপাত। ভিডিওতে অধ্যাপক জৌহর মুনাবীরের বিতর্কিত মন্তব্যের জেরেই ঝড় উঠেছে কেরালার শিক্ষামহলে। অভিযোগ, সম্প্রতি একটি পারিবারিক কাউন্সিলিং অনুষ্ঠানে গিয়ে কলেজের ছাত্রীদের পোশাক নিয়ে অশালীন মন্তব্য করে বসেন ওই অধ্যাপক। ‘মুফতা’ না পড়ায় কলেজের মুসলিম ছাত্রীদের কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন অধ্যাপক জৌহর। মুফতার বদলে শাল ব্যবহার করায় ক্ষোভ উগড়ে দেন তিনি। অভিযোগ, এরপরেই সর্বসমক্ষে ছাত্রীদের উন্মুক্ত বক্ষের সঙ্গে তরমুজের তুলনা করেন অধ্যাপক। তাঁর দাবি, এমনভাবে পোশাক পরা হচ্ছে যাতে ছাত্রীদের বক্ষদ্বয় উন্মুক্ত হয়। কলেজ পড়ুয়াদের দাবি, তারপরেও মুখে কোনওরকম লাগাম টানার কথা মাথায় আসেনি অধ্যাপকের। ছাত্রীদের লেগিনস পড়া নিয়েও প্রশ্ন তোলেন জৌহর মুনাবীর।
সোশ্যাল মিডিয়ায় অধ্যাপকের মন্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হতেই তোলপাড় হয় কলেজ চত্বরে। সোমবার বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বে প্রতিবাদী ছাত্রীরা কলেজ গেটে তরমুজ নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও পড়ুয়াদের সম্মিলিত প্রতিরোধের কাছে কার্যত তাদের অসহায় দেখাচ্ছিল। বেলার দিকে কলেজ কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের সমস্ত দাবি খতিয়ে দেখে অভিযুক্ত অধ্যাপকের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ উঠে যায়। অন্যদিকে ছাত্র সংগঠনগুলির অধ্যাপককে পরামর্শ ছাত্রীদের দেহের অন্যান্য অংশে নজর না দিয়ে শিক্ষকের উচিত কেবল তাঁদের মুখের দিকে চেয়ে পড়ানো।