অসমে এনআরসি বা নাগরিকপঞ্জীর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হল শনিবার সকালে। সেই তালিকায় নেই অসমে বসবাসকারী ১৯ লক্ষ ৬ হাজার ৬৫৭ জনের নাম। এঁরা ভারতীয় নাগরিক হিসাবে আর মান্যতা পেলেন না। চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী অসমের ৩ কোটি ১১ লক্ষ ২১ হাজার ৪ জন ভারতীয় নাগরিকের স্বীকৃতি পেলেন। শনিবার সকাল ১০টায় এই তালিকা অনলাইনে প্রকাশিত হয়।
গত ৬ বছর ধরেই এই জল্পনা চলছিল যে অসমে অনেক বিদেশি নাগরিক বসবাস করছেন। এঁদের চিহ্নিত করা নিয়ে কেন্দ্র চালু করে নাগরিকপঞ্জী তৈরির কাজ। ভারতের মধ্যে অসমেই এই নাগরিকপঞ্জী গঠনের কাজ প্রথম হয়। যা বিরোধীদের প্রবল সমালোচনার মুখেও পড়ে। অসমেও একটা আতঙ্ক ছড়ায় যে ভারতের বাসিন্দা হয়েও হয়তো সঠিক কাগজের অভাবে তাঁদের অনেকের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারে। ভারত ছাড়তে হতে পারে তাঁদের। অবশেষে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অসমে নাগরিকপঞ্জী তৈরির কাজ শেষ হল। প্রকাশিত হল চূড়ান্ত তালিকা।
২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই নাগরিকপঞ্জী আপডেট করার কাজ শুরু হয়। পরে অসমকে বাকি দেশ থেকে আলাদা করে সেখানে ২০১৫ সালের মে মাস থেকে শুরু হয় নাগরিকপঞ্জী গঠনের জন্য আবেদন গ্রহণের কাজ। যা চলে ২০১৫ সালের অগাস্ট মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত। সে সময়ে মোট ৩ কোটি ৩০ লক্ষ ২৭ হাজার ৬৬১ জন নির্দিষ্ট ফর্মে আবেদন জমা দেন। তারপর গত বছর একটি তালিকা প্রকাশিত হয়। যেখানে আরও কম মানুষের নাম ছিল। তারপর তাও পুনর্বিবেচনা করে অবশেষে প্রকাশিত হল চূড়ান্ত তালিকা।
এখন প্রশ্ন হল যাঁদের নাম চূড়ান্ত তালিকায় নেই তাঁদের কী সরকার আটক করবে বিদেশি নাগরিক হিসাবে? নাকি তাঁদের এখনই দেশ ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হবে? প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে তা নয়। যাঁদের নাম চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়ল তাঁরা এই সিদ্ধান্তে আশ্বস্ত না হলে প্রথমে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল-এর দ্বারস্থ হতে পারবেন। সেখানকার সিদ্ধান্তেও খুশি না হলে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবেন। তবে প্রথম তাঁদের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালেই যেতে হবে। এজন্য অসমে ৪০০টি ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল গঠন করছে অসম সরকার। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা