আজ কোন দেবীর পুজো করা হয় ও কী তাঁর রূপ
দেবী দুর্গার নয়টি রূপের নামকরণ করেছিলেন পিতামহ ব্রহ্মা। নয়টি নামের নয়টি বৈচিত্র্যময় রূপভেদ ও শক্তি। এঁরা প্রত্যেকেই দেবী দুর্গার নয়টি কায়াব্যূহ মূর্তি।
রামচন্দ্র দুর্গাপুজোর পক্ষে অকাল বলেছিলেন শরৎকালকে, কেন? শরৎকাল, সূর্যের দক্ষিণায়ন। সমস্ত দেবদেবীর নিদ্রার সময়। অনন্যোপায় ভগবান ব্রহ্মা দেবী দুর্গাকে জাগরিত করলেন স্তবস্তুতি করে। দেবী তখন কুমারীর বেশে এসে ব্রহ্মাকে বললেন, বিল্বমূলে দুর্গার বোধন করতে। দেবীর আদেশ যথানিয়মে পালন করলেন পিতামহ ব্রহ্মা।
মহালয়ার পরের দিন প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত নয়রাত্রি ব্যাপী দেবী দুর্গার নয়টি রূপ ও শক্তির যে আরাধনা করা হয় সেটিই নবরাত্রি ব্রত।
দেবী দুর্গার নয়টি রূপের নামকরণ করেছিলেন পিতামহ ব্রহ্মা। নয়টি নামের নয়টি বৈচিত্র্যময় রূপভেদ ও শক্তি। এঁরা প্রত্যেকেই দেবী দুর্গার নয়টি কায়াব্যূহ মূর্তি। এই নয়টি নামের উল্লেখ আছে শ্রীশ্রীচণ্ডীতে।
শৈলপুত্রী
কূর্মপুরাণ মতে দেবী দুর্গা শৈলভক্ত অর্থাৎ পর্বতরাজ হিমালয়ের পুত্রীত্ব স্বীকার করেছিলেন কারুণ্যবশে। তাই হিমালয়ের কন্যারূপে জন্মগ্রহণ করায় মা দুর্গার নবরূপের প্রথম রূপটি শৈলপুত্রী নামে সুখ্যাত। দেবীর বাহন বৃষ। দ্বিভুজা দেবীর ডানহাতে ত্রিশূল, বামহাতে শোভিত কমল। অপূর্বরূপে রূপবতী ও লাবণ্যময়ী দেবী।
পূর্বজন্মে প্রজাপতি দক্ষরাজার কন্যা ছিলেন দেবী দুর্গা, তখন তিনি অভিহিত ছিলেন সতী নামে। ভগবান শঙ্করের সঙ্গে বিবাহ হয় সতীর।
একবার এক বিশাল যজ্ঞ করেন প্রজাপতি দক্ষ। কিন্তু এই যজ্ঞে নিমন্ত্রণ করেননি শঙ্করকে। স্বামী শঙ্করের এই অপমান সহ্য করতে পারলে না সতী। দেহত্যাগ করলেন যজ্ঞভূমিতে।
দেহত্যাগের পর পরজন্মে শৈলরাজ হিমালয়ের কন্যারূপে আবার জন্ম নিলেন সতী। এই জন্মে পরিচিত হলেন শৈলপুত্রী নামে। তাঁরই নাম হৈমবতী, পার্বতীও। পূর্বজন্মের মতো এ জন্মেও তিনি ছিলেন শিবের অর্ধাঙ্গিনী।
নবরাত্রি পুজোর প্রথম দিনে দেবীর এই রূপের পুজো করা হয়।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার : ‘নবদুর্গা’ অনুবাদিকা গায়ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায়, গীতা প্রেস, গোরক্ষপুর। ছবি এঁকেছেন পরমেশ এবং বি.কে. মিত্র। এদের সকলের কাছে কৃতজ্ঞ রইলাম ক্ষমা প্রার্থী হয়ে। সহায়ক গ্রন্থ শ্রীশ্রীচণ্ডী। এছাড়াও শাস্ত্রীয় শিক্ষাগুরু স্বর্গীয় জ্ঞানদাপ্রসাদ চৌধুরী। কৃতজ্ঞতা ভাষা বা লেখায় প্রকাশ করা যায় না। এ অন্তরের এক আনন্দময় অনুভূতি যে। – শিবশংকর ভারতী, ছবি – সৌজন্যে – গীতা প্রেস, গোরক্ষপুর