৩৭ বছর পর যথাস্থানে ফিরল বিরল মূর্তি
৩৭ বছর আগে চুরি হয়ে গিয়েছিল মূর্তিটি। তা যে ফেরত পাওয়া যাবে এমনটা কল্পনাও করতে পারেননি কেউ। কিন্তু অবিশ্বাস্য ভাবে মূর্তি ফিরল যথাস্থানে।
নয়াদিল্লি : অবিশ্বাস্য ভাবে ৩৭ বছর পর যথাস্থানে ফিরল নেপাল থেকে চুরি যাওয়া দশম থেকে একাদশ শতাব্দীর অতিপ্রাচীন এক লক্ষ্মী-নারায়ণের মূর্তি। ৩৩ বাই ১৯ ইঞ্চির গ্রে স্টোনের তৈরি মূর্তিটি ১৯৮৪ সালে নেপালের ললিতপুর জেলার পাটনের নারায়ণ মন্দির থেকে চুরি যায়।
এবছর মার্চের শুরুতে ওয়াশিংটনে নেপালের রাষ্ট্রদূত যুবরাজ খাটিওয়াড়ার হাতে মূর্তিটি তুলে দেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর টিমোথি ডানহাম। এই মূর্তি ফিরে পাওয়ার পুরো ঘটনাক্রম যেকোনও রহস্যরোমাঞ্চ উপন্যাসকে হার মানাতে পারে।
দেশের প্রাচীন শিল্পকলার সাথে জুড়ে থাকে দেশের ঐতিহ্য ও সম্মান। কোনও ভাবে সেই শিল্প ধ্বংস হলে বা হারিয়ে গেলে ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে যায় বিশেষ কোনও ঘটনা বা সময়।
নেপাল ঐতিহাসিক স্থাপত্যকলা ও শৈলীর জন্য সারা বিশ্বে সমাদৃত। তবে নেপালের অনেক শিল্পকলার নিদর্শন সঠিকভাবে সংরক্ষণের অভাবে লুঠ ও চুরি হয়ে গেছে নানা সময়ে।
তেমনই একটি নিদর্শন হল পাটনের নারায়ণ মন্দিরের বাসুদেব-কমলাজা বা লক্ষ্মী-নারায়ণের মূর্তিটি। লৈনসিং বাংডেলের ‘স্টোলেন ইমেজেস অফ নেপাল’ বইটিতে এই মূর্তির ছবি ছিল।
মূর্তিটি চুরি যাওয়ার পরে বহু পথ পেরিয়ে এসে পৌঁছয় নিউ ইয়র্কের একটি নিলামঘরে। তারপর নিলাম হয়ে যায় সেটি। অবশেষে সেটি জায়গা পায় টেক্সাসের অন্যতম বৃহৎ সংগ্রহশালা ডালাস মিউজিয়ামে।
নিউ ইয়র্কের জন জে কলেজ অফ ক্রিমিনাল জাস্টিস-এর আর্ট ক্রাইমের অধ্যাপক এরিন থমসনের একটি টুইট থেকেই পরিস্কার হয়ে যায় চুরির ঘটনাটি। এরিন জানান চিত্রশিল্পী জয় লিন ডেভিস নেপাল থেকে হারিয়ে যাওয়া শিল্পকলার নিদর্শন খুঁজতে গিয়ে খুঁজে পান এই বাসুদেব-কমলাজার মূর্তির একটি ছবি। সেই ছবির তিনি একটি বাস্তব সম্মত প্রতিকৃতি আঁকেন।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে মূর্তিটি নেপালে পাটনের মন্দিরে পূজিত হচ্ছে। সেই ছবি থেকেই ডালাস মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ মূর্তি সম্পর্কিত আসল ঘটনাপ্রবাহ জানতে পারে। এফবিআই-এর সহযোগিতায় মূর্তিটি যথাস্থানে ফিরিয়ে দিতে উদ্যোগী হয় মিউজিয়াম। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা