অবশেষে বরফ গলল। তাঁদের অনড় অবস্থান থেকে সরে এলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। মুখ্যমন্ত্রী যেখানে চাইবেন সেখানেই তাঁরা আলোচনায় বসতে রাজি। তবে তাঁদের কয়েকটি শর্ত রয়েছে। বৈঠকে শুধু এনআরএস নয়, সব আন্দোলনরত হাসপাতালের প্রতিনিধিরাই উপস্থিত থাকবেন। স্বচ্ছতা বজায় রাখতে বন্ধ দরজার পিছনে বৈঠক হবে না। সবকটি ন্যাশনাল মিডিয়াকে ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকার সুযোগ দিতে হবে। এখন এই শর্তগুলি রাজ্য সরকার কতটা মেনে নেবে তা পরিস্কার নয়। তবে বরফ যে গলতে শুরু করেছে তা গোটা রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য সুখবর।
আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা রবিবারও তাঁদের অবস্থানে সকাল থেকে অনড় ছিলেন। এদিন ষষ্ঠ দিনে পা দেওয়া ওই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রোগী দুর্ভোগের চিত্রটা ছিল অন্য দিনের মতই। একে এই প্রবল গরম। তারমধ্যে হাসপাতালে দূর দূর থেকে রোগী নিয়ে হাজির হওয়া মানুষজন কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। অনেকের পক্ষেই বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে দেখানো সম্ভব ছিল না। ফলে হাসপাতালে দেখাতে তাঁরা সবরকম ভাবে চেষ্টা চালান।
গত শনিবার মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন নবান্নে তিনি সিনিয়র চিকিৎসকদের কথা শুনে আন্দোলনরত ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলতে ৫ ঘণ্টা অপেক্ষা করেন। কিন্তু তাঁরা আসেননি। প্রচ্ছন্নে মুখ্যমন্ত্রী এটাও বুঝিয়ে দেন যে তিনি চাইলে এসমা জারি করে আন্দোলন ভেঙে ডাক্তারদের বাধ্য করতে পারতেন কাজে যোগ দিতে। কিন্তু তিনি তা করেননি। বরং তিনি তখনও সাংবাদিক বৈঠক থেকে আন্দোলনরত ডাক্তারদের আলোচনায় বসতে আহ্বান জানান। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর সেই বার্তার পরও জুনিয়র ডাক্তাররা জানিয়ে দেন যতক্ষণ না মুখ্যমন্ত্রী এনআরএস হাসপাতালে এসে তাঁদের সঙ্গে কথা বলছেন ততক্ষণ তাঁরা নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকবেন।
ডাক্তাররা একথা জানানোর পর ফের আশঙ্কার মেঘ জমে। তবে কী জট কাটবে না? এই অবস্থায় আন্দোলনের ষষ্ঠ দিন রবিবারও রোগী দুর্ভোগ চরমে ওঠে। তারপর বৈঠকের পর জুনিয়র ডাক্তাররা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে রাজি হন। তবে শর্ত সাপেক্ষে। পুরো মধ্যস্থতায় সিনিয়র চিকিৎসকরাও প্রকারান্তরে বড় ভূমিকা নিচ্ছেন। তাঁদের উদ্যোগ এই বৈঠকের রাস্তা খোলার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছে বলেই মনে করছেন চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত মানুষজনের একাংশ। এখন সোমবার কী হয় সেদিকেই চেয়ে গোটা রাজ্য।