এনআরএস-এ জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান বিক্ষোভমঞ্চে হাজির হলেন বুদ্ধিজীবীদের একাংশ। শুক্রবার সেখানে হাজির হয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে থাকার বার্তাই দেন তাঁরা। সেইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে নিজের অবস্থান থেকে একটু সরে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলার আবেদন জানান। গত সোমবার রাতে রোগী মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হওয়া তাণ্ডবে নির্মমভাবে মারা হয় ২ জুনিয়র ডাক্তারকে। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে তাঁদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেন এনআরএস হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা। জুনিয়র ডাক্তারদের এই আন্দোলন ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যের প্রায় সব হাসপাতালে। এখানে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে এ ক্ষেত্রে কেন চুপ করে আছেন বুদ্ধিজীবীরা। অবশেষে তাঁরা সামনে এলেন শুক্রবার।
শুক্রবার এনআরএস হাসপাতালে হাজির হন অভিনেত্রী তথা পরিচালক অপর্ণা সেন, নাট্যকার-অভিনেতা কৌশিক সেন সহ রাজ্যের কয়েকজন তথাকথিত বুদ্ধিজীবী। অপর্ণা সেন বলেন, যাঁরা চিকিৎসক হয়েছেন তাঁরা অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রছাত্রী। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের অভিভাবকের মত। এই অচলাবস্থা কাটাতে মুখ্যমন্ত্রী যদি জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে এসে কথা বলেন তাহলে সমস্যার সমাধান হতে পারে। তাই মুখ্যমন্ত্রীকে নিজের অবস্থান থেকে একটু সরার আহ্বান জানান তাঁরা। সেইসঙ্গে জানান, এই আন্দোলনের জেরে বহু মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছেন না। আর তাঁরা চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা কতটা কষ্ট পাচ্ছেন তা তিনি বোঝেন বলেও এদিন জানান অপর্ণা সেন। পাশাপাশি ডাক্তারদের ওপর যদি আক্রমণ হয় তবে তাঁদের পক্ষে কাজ করা সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর কাজে আবেদনের সুরেই অপর্ণা জানান, মুখ্যমন্ত্রী শুধু রোগীদের মুখ্যমন্ত্রী নন, তিনি ডাক্তারদেরও মুখ্যমন্ত্রী। রোগীদের সমস্যায় যতটা দায় ডাক্তারদের রয়েছে, ততটা দায় প্রশাসনেরও রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীকে এসে আন্দোলনরতদের সঙ্গে কথা বলার জন্যও অনুরোধ করেন অপর্ণা সেন। তাঁদের কী সমস্যা তা শোনার চেষ্টা করা মুখ্যমন্ত্রীর উচিত বলেও জানান তিনি।
কৌশিক সেন জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে পরামর্শের সুরে বলেন, দরকারে ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল বন্ধ করে, নজরুল মঞ্চ ভাড়া করে শিল্পীদের টাকা দিয়ে পুরস্কার দেওয়া বন্ধ করে, মেলা বন্ধ করে, সেই টাকা দিয়ে হাসপাতালের উন্নতি করুন। এদিন বুদ্ধিজীবীদের এই দলে ছিলেন দেবজ্যোতি মিশ্র, বোলান গঙ্গোপাধ্যায়ের মত মানুষজনও। এদিকে শুক্রবারও রাজ্যের প্রায় সব হাসপাতালেই চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ। চূড়ান্ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন রোগীরা।