১০ বছরের বালিকার স্বপ্নপূরণ, বিয়ে করে না ফেরার রাজ্যে ছোট্ট মেয়েটা
এ কাহিনি চোখে জল এনে দিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন কোণার মানুষের। কেউই মেনে নিতে পারছেন না ওই ছোট্ট মেয়েটার এমন এক মৃত্যু। তবে বিয়ের ইচ্ছাপূরণ তার হয়েছে।
বড় সাধ ছিল সে বিয়ে করবে। সুন্দর করে সাজবে বিয়ের দিন। সে সাধ তার পূরণ হয়েছে। তার বিয়ে হয়েছে। বিয়েটাও হয়েছে সে যে কিশোরকে ভালবেসেছিল তার সঙ্গেই। ছোট করে বিয়ে নয়। ধুমধাম করে পরিচিতদের নিমন্ত্রণ করে বিয়ে। বিয়ের নিয়মও পালিত হয় যথার্থভাবে। সকলেই মনে মনে কেঁদেছিলেন সেদিন। তবে মুখে হাসি লেপ্টে রেখেছিলেন। সে অভিনয় বাকিদের জন্য কতটা কঠিন জানা নেই। তবে বাবা মায়ের জন্য যে কি কঠিন তা বিশ্বের সব অভিভাবকের পক্ষেই অনুমেয়।
এমা এডওয়ার্ডসের যখন ৯ বছর বয়স তখন তার পায়ের হাড়ে ক্যানসার ধরা পড়ে। সেটা গত বছরের কথা। চিকিৎসকেরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত ছিলেন যে তাকে বাঁচানো যাবে। কিন্তু ক্যানসার হুহু করে ছড়াতে থাকে তার রক্ত ও মজ্জায়।
এ ক্যানসারের নাম অ্যাকিউট লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া। জুন মাসে চিকিৎসকেরা ১০ বছরের ওই ফুটফুটে মেয়েটার বাবা মাকে ডেকে জানিয়ে দেন আর কিছু করার নেই। সব হাতের বাইরে। এমাকে বাঁচানো অসম্ভব। তার হাতে আর বেশি দিনও বাকি নেই।
মেয়ে যে সেরে উঠবে না তা তাঁরা কল্পনাও করতে পারেননি। ছোট্ট মেয়েটা বাবা মাকে একা রেখে না ফেরার দেশে পাড়ি দিতে চলেছে। এ সত্যকে মেনে নেওয়া অসম্ভব ছিল এমার বাবা মায়ের জন্য।
কিন্তু বুকের কষ্ট বুকে চেপে রেখে তাঁরা স্থির করেন মেয়ের বিয়ে দেবেন। মিছে বিয়ে। কিন্তু মেয়ের যে বড় ইচ্ছা ছিল তার বিয়ে হবে। সে যে এক কিশোরকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালবাসে।
বাবা মা মাত্র ২ দিনের চেষ্টায় সব আয়োজন করে ফেলেন। বিয়ের দিন সকলে হাজির হন। এমাকে বিয়ের কনের সাজে সাজানো হয়। তবে তাকে চেয়ার থেকে তোলা যায়নি। সে যে কতটা পুরো আয়োজন অনুভব করতে পেরেছিল তাও অজানা।
তারপর এমার পছন্দের কিশোরের সঙ্গে তার বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পর ১২টা দিনই বেঁচেছিল এমা। ১২ দিন পর মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে সে। সকলকে ফেলে পাড়ি দেয় না ফেরার সেই অজানা দেশে।
ঘটনাটি ঘটেছে আমেরিকার নর্থ ক্যারোলিনায়। এ কাহিনি বিশ্বের তাবড় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এমার কথা বিশ্বের যে প্রান্তের মানুষই পড়েছেন, তাঁরই চোখের জল বাঁধ মানেনি।