মহাসমুদ্রের তলদেশে হলুদ ইট বসানো রাস্তা, কারা বানাল এই রাস্তা
মহাসাগরের তলদেশে পরপর ইট সাজিয়ে রাস্তা। বেশ যত্ন করে তৈরি সেই ইটের রাস্তা বিজ্ঞানীদের মাথা ঘুরিয়ে দেয়। কে বানাল এই রাস্তা।

প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তরভাগে অবস্থিত হনলুলু। এই হনলুলুর কাছেই মহাসমুদ্রের জলের ৩ হাজার মিটার তলায় সমুদ্র তলদেশের ছবি বিজ্ঞানীদের মাথা ঘুরিয়ে দেয়। ওশান এক্সপ্লোরেশন ট্রাস্ট-এর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত একটি মিশন জলের তলায় পাঠানো হয় সেখানকার পরিস্থিতি দেখতে।
নটিলাস নামে একটি যান নেমে যায় জলের ৩ হাজার মিটার গভীরে। ২০২২ সালে হওয়া এই অভিযানে নটিলাস সমুদ্র তলদেশের যে দৃশ্য বিজ্ঞানীদের সামনে তুলে ধরে তার ব্যাখ্যা তখনকার মত দিতে পারেননি তাঁরা।
দেখা যায় ৩ হাজার মিটার বা ৯ হাজার ৮৪২ ফুট গভীরে সমুদ্রের তলদেশে একটি হলুদ ইট বসানো রাস্তা। ইটগুলি প্রায় একই আকারের গায়ে গায়ে বসানো। সেটাই লম্বা হয়ে পরপর সাজিয়ে চলে গেছে অনেকটা দূর পর্যন্ত।
এটা দেখার পর অনেকেই বুঝতে পারছিলেননা এমন সুন্দর করে সাজানো ইটের রাস্তা সমুদ্রের অত গভীরে এল কোথা থেকে? সামনে আসতে শুরু করে সমুদ্রের তলার নগরীর তত্ত্ব। অনেকে আবার এটা দেখে সমুদ্রের গভীরে বসবাসকারী অচেনা জীবদের থাকার সম্ভাবনার কথা জানান।
এই হলুদ ইটের রাস্তার রহস্য নিয়ে দুনিয়া তোলপাড় হয়। বিজ্ঞানীরা তা নিয়ে পরীক্ষা শুরু করেন। আর তাতেই অবশেষে এই রহস্যের জট খুলতে পেরেছেন তাঁরা।
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এই হলুদ ইট আদপে তৈরি হয়েছে আগ্নেয়গিরি থেকে। জলের তলায় অগ্নুৎপাত থেকে বার হওয়া লাভা স্রোত জলের সংস্পর্শে এসে দ্রুত ঠান্ডা হয়। এই গরম ও ঠান্ডার সংকোচন প্রসারণের ফলে এমন একটি অংশ তৈরি হয় জলের তলায় যেখানে ফাটল ধরে।
এই ফাটলগুলির ওপর জলের প্রবল চাপও কাজ করে। ফলে ফাটলগুলি এমনভাবে তৈরি হয় যা দেখতে মনে হয় ইটের পর ইট। আসলে একটি বিশাল অংশ জুড়ে এমন লম্বা লম্বা ফাটল তৈরি হয় যা পরপর সাজানো ইটের মত দেখতে হয়ে যায়।
লক্ষ লক্ষ বছর ধরে এই ইটের মত রূপ নিয়ে তা জলের তলদেশেই রয়ে গেছে। যা নটিলাস দেখতে পাওয়ার পর বিজ্ঞানীরা প্রশান্ত মহাসাগরের আরও এক রহস্যের কথা জানতে পারলেন।