National

পদ্মাবত রাজপুত গরিমাকেই প্রকাশিত করেছে জানিয়ে আন্দোলন তুলে নিল করণী সেনা

একেই বলে পর্বতের মূষিক প্রসব। দীপিকা পাড়ুকোন থেকে সঞ্জয় লীলা বনশালি, সকলের নাক কান, গলা কেটে নেওয়ার হুমকি। গলা কেটে আনতে পারলে মোটা অঙ্কের পুরস্কার। খুল্লমখুল্লা খুনের হুমকি। ভাঙচুর, আগুন। আদালতের দরজায় কড়া নাড়া। কি করেনি তারা? কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই করণী সেনা নিমেষে ঘোষণা করল পদ্মাবত সিনেমায় রাজপুতদের বীরত্বই তুলে ধরা হয়েছে। তাই তারা সব আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। এতে অনেকেরই বক্তব্য তাহলে সিনেমা না দেখেই এতকিছু করে ফেলল করণী সেনা? একবার যাচাই করা তো যেত, যে সিনেমায় আছেটা কি? তারপর না হয় পছন্দ না হলে আন্দোলন। অথচ সেই ২০১৬ সালে জয়পুরে পদ্মাবতী যা এই সিনেমার আগের নাম ছিল, তার সেটে ঢুকে পরিচালক সঞ্জয় লীলা বনশালিকে চড় মেরে সেট ভাঙচুর করে খবরে আসে করণী সেনা। সেই শুরু। তারপর মুম্বইতেও পুড়িয়ে দেওয়া হয় সিনেমার রাজকীয় শ্যুটিং সেট। যখন সিনেমা মুক্তি পাওয়ার দিকে এগোচ্ছে তখন উত্তর ও পশ্চিম ভারত জুড়ে শুরু হয় আন্দোলন। করণী সেনার দাবি ছিল আলাউদ্দিন খিলজি ও রানি পদ্মাবতীর একটি স্বপ্নের মধ্যে রোমান্টিক দৃশ্য রয়েছে এই সিনেমায়। সেইসঙ্গে রাজপুতদের ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে বলে দাবি করে ক্রমশ আন্দোলনের তীব্রতা বাড়াতে থাকে তারা। এমনকি সেন্সর বোর্ডে পদ্মাবতী নাম বদলে পদ্মাবত করা ও বোর্ডের নির্দেশে কাটছাঁটের পর ছবি যখন মুক্তির অপেক্ষায় তখনও সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে সিনেমার মুক্তি রোখার চেষ্টা চালায় রাজপুত কয়েকটি সংগঠন। যার সর্বাগ্রে ছিল করণী সেনা। সুপ্রিম কোর্ট নাকচ করে দেয় সেই আবেদন। তারপর পদ্মাবত মুক্তির আগের দিন জহরব্রত পালনের হুমকিও আসে রাজপুত রমণীদের একাংশের কাছ থেকে। মাল্টিপ্লেক্সে ভাঙচুর, আগুন। কিনা হয়েছে! তারমধ্যেই অবশ্য মুক্তি পায় পদ্মাবত। মুক্তি পাওয়া পদ্মাবত দেখেন কয়েকজন করণী সেনার সদস্য। তাঁরাই সিনেমাটিকে অবশেষে ‘সার্টিফিকেট’ দেন। জানান এই সিনেমায় রাজপুত ইতিহাসকে বিকৃত করা নয়, বরং রাজপুতদের গরিমাকেই আরও উজ্জ্বল করা হয়েছে। তারপরই ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে করণী সেনা জানিয়ে দেয় তারা তাদের সব আন্দোলন প্রত্যাহার করছে।

তবে এরমধ্যেও একটা প্রশ্ন অনেকেই তুলছেন। এটা সিনেমা চালানোর এক অন্য চাল নয়তো? সিনেমা মুক্তির পর করণী সেনার গুটিয়ে যাওয়া ও তারপর এদিন আন্দোলন প্রত্যাহার। তবে কি আন্দোলনটা চলছিলই সিনেমার মুক্তির আগে পর্যন্ত? এও একধরণের সিনেমার প্রচার? সিনেমাটিকে ঘিরে কৌতূহলকে চরম পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া? সবই ঠিকঠাক? সে নিন্দুকেরা যাই বলুন, করণী সেনার আন্দোলন প্রত্যাহারের খবর অনেকটাই স্বস্তি দিল আমজনতাকে। এবার অন্তত যাঁরা চান তাঁরা নিশ্চিন্তে সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমাটি দেখতে পারবেন।



Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button