পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর ও গিলগিট-বালতিস্তান। গ্রেটার কাশ্মীরের এই ২টি জায়গা নিজেদের দখলে রেখে দিয়েছে পাকিস্তান। গত ১৪ অগাস্ট সেখানে গিয়ে সেখানকার মানুষের পাশে থাকার বার্তাও দিয়ে এসেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। অন্য সুরে গেয়ে সেখান থেকে একটা যুদ্ধের ইঙ্গিতও শোনা গেছে ইমরানের গলায়।
সেখানকার মানুষের পাশে থাকার বার্তা খোদ পাক প্রধানমন্ত্রী দিলেও আদপে কিন্তু ইসলামাবাদ ওই এলাকা জুড়ে প্রাকৃতিক সম্পদ লুঠের খোলা ইজারা দিয়ে রেখেছে চিনকে। বিশেষত গিলগিট-বালতিস্তান এলাকা জুড়ে যেমন সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য তেমনই হিমালয়ের কোল জুড়ে এই এলাকার মাটির তলা ভর্তি মূল্যবান ধাতু, খনিজ সম্পদ, এমনকি দামি পাথরে। আর সেখানেই একের পর খনিতে দেদার খনন চালাচ্ছে চিন। সেখান থেকে সব সম্পদ লুঠে নিয়ে যাচ্ছে পাক সরকারের থেকে পাওয়া লাইসেন্সে। অথচ সেখানকার স্থানীয় প্রশাসনকে এই খননের থেকে পাওয়া সম্পদের লভ্যাংশের ছিটেফোঁটাও দিচ্ছেনা।
ভারতের ইন্সটিটিউট অফ ডিফেন্স স্টাডিজ এন্ড অ্যানালিসিস-এর ৩ বিশেষজ্ঞ এই নিয়ে গবেষণার পর একটি রিপোর্ট পেশ করেছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে কীভাবে গিলগিট-বালতিস্তান থেকে চিন সব সম্পদ লুঠে নিয়ে যাচ্ছে। এখান থেকে চিন পর্যন্ত একটি বাণিজ্য করিডরও তৈরি করেছে চিন।
এখানে বিভিন্ন খনিতে ভর্তি থাকা সোনা, প্ল্যাটিনাম, কোবাল্ট, ইউরেনিয়ামের মত বহুমূল্য খনিজ ও ধাতু দিনের পর দিন খননের মধ্যে দিয়ে চিনে নিয়ে চলে যাচ্ছে চিনা সংস্থাগুলি। আর তাদের এই লুঠের খোলা সুযোগ দিয়ে রেখেছে পাকিস্তান। সেই পাকিস্তান যারা এই এলাকাকে নিজেদের বলে দাবি করে জোর করে আটকে রেখেছে। এখানকার মানুষজনকে দুর্বিষহ পরিস্থিতির শিকার করেছে। তাঁদের জায়গার প্রাকৃতিক সম্পদ অন্য দেশের সংস্থাকে লুঠে করে নিয়ে যেতে সাহায্য করছে।
এমন নয় যে এই এলাকার মানুষের কাছে এ বিষয়গুলি অজানা। তাঁরা বারবার চিনকে এই সুযোগ দেওয়ার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। কিন্তু সে ক্ষেত্রে চিনকে মদত দিয়ে চিনের সংস্থার পাশে দাঁড়িয়ে তাদের কাজের যাতে সমস্যা না হয় সেজন্য এলাকার মানুষকে শান্ত করায় জোর দিয়েছে পাকিস্তান সরকার।
শওকত কাশ্মীরি, মুমতাজ খানের মত যাঁরা চিনকে এই সুযোগ দেওয়ার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের চুপ করিয়ে দিয়েছে পাকিস্তান। তাঁদের পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে পাকিস্তান বিতাড়িত করেছে। কিন্তু চিনের লুঠের বিরুদ্ধে কোনও স্বরকে বেশি উঁচু হয়ে দেয়নি। যাঁদের সম্পদ, তাঁরা থাকছেন তাই চরম দুর্দশায়। আর ইসলামাবাদের ছাড়পত্রে সেখানে ঢুকে সব সম্পদ লুঠ করছে চিন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা