নুনের তৈরি একটা আস্ত হোটেল, থাকা যাবে তবে চেটে দেখা মানা
নুনের তৈরি একটা হোটেল যে হতে পারে তা অনেকেই বিশ্বাস করতে পারবেননা। কিন্তু সেটাই সত্যিই। চাইলে ঘুরেও আসতে পারেন যে কেউ।
চারিদিকে শুধু নুন আর নুন। শ্বেতশুভ্র নুনের ধু ধু প্রান্তর। এই নুনের প্রান্তরই হল বিশ্বের সবচেয়ে বড় নুনের সমতল। এখানেই ১৯৯৩ সালে এক ব্যক্তির মাথায় এক অভিনব ভাবনা আসে।
তিনি ছিলেন ট্যুরিস্ট গাইড। তাঁর মনে হয় এই যে নুনের এই বিপুল সম্ভার ছড়িয়ে রয়েছে তাকে কাজে লাগিয়ে যদি একটা হোটেল বানানো যায়!
নুন দিয়ে হোটেল? শুনতে অবাক করা হলেও তিনি ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৫ সালের মধ্যে ওই নুনের প্রান্তরের মাঝেই একটি হোটেল তৈরি করেন। ছোট হোটেল। তবে পুরোটাই নুন দিয়ে তৈরি।
নুনের বড় বড় টুকরোকে পরপর ইটের মত সাজিয়ে তৈরি হয় হোটেল। এই ইটের মত নুনের চাঁই যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য তার ওপর ফাইবার গ্লাসের পরত দেওয়া হয়। এতে নুন গলার আর ভয় রইল না। সে প্রবল বৃষ্টি নামলেও নয়।
এরপর সেই তৈরি করা নুনের ইট সাজিয়ে তৈরি হয় হোটেল। যার ঘর থেকে বাথরুম, বিছানা, চেয়ার, টেবিল পর্যন্ত তৈরি হয় নুন দিয়ে। কিন্তু তা অচিরেই সমস্যার মুখে পড়ে।
কারণ দক্ষিণ পশ্চিম বলিভিয়ার নুনের প্রান্তর সালার দে উনি-র মাঝখানে তৈরি এই হোটেলে ছিলনা বাথরুমের বর্জ্যকে পদ্ধতিগত উপায়ে নষ্ট করার রাস্তা। ফলে তা মূলত সেখান থেকে সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়ে বাইরে ফেলা হত। এই সমস্যার কারণে হোটেল ২০০২ সালে বন্ধ হয়ে যায়। তবে দমে যাননি এর রূপকার।
তিনি এই একই নুনের হোটেল আরও বড় ও সরকারি স্যানিটেশন নিয়ম মেনে তৈরি করেন নুন প্রান্তরের ধারের দিকে। মাঝখানে নয়। নাম দেন প্যালাসিও দে সাল, যার বাংলা করলে দাঁড়ায় নুনের প্রাসাদ।
প্রায় ১০ লক্ষ ১৪ ইঞ্চির নুনের ইট দিয়ে এই হোটেল তৈরি হয়। যেখানে ঘর, বিছানা, বাথরুম, চেয়ার, টেবিল, সাজানোর জিনিস, সবই নুন দিয়ে তৈরি।
এটি ২০০৭ সাল থেকে চলছে। বহু মানুষ এখানে শুধু থাকতেই নয়, নুনের যে হোটেল হতে পারে তা নিজের চোখে দেখতেও এখানে হাজির হন।
পুরনো হোটেলটিতে এঁরা হোটেলে আসা মানুষকে দেওয়াল চেটে দেখতেও দিতেন হোটেলটি নুনের কিনা। প্যালাসিও দে সাল-এ অবশ্য এই চেটে দেখা নিষিদ্ধ।