সমাধিস্থলের রঙিন চাদরটি সত্যিই কি রহস্যময় চাদর
দেখে মনে হবে একটি চাদর যেন সমাধিস্থলের ওপর ঢাকা দেওয়া আছে। কিন্তু চাদরের মত দেখতে লাগলেও ওটা আদপে চাদর নয়। আসল বস্তুটি জানলে অনেকেই বিশ্বাস করবেননা।
একটি রঙিন সুতোর কাজ করা চাদর। কাজে যেমন সুতোর ঠাসবুনোট কাজ, তেমনই তার অপরূপ বুনন। দেখে অনেকের চোখ জুড়িয়ে যেতে পারে। যে মানুষটি সারাজীবন ধরে কেবল একটি শখকে সযত্নে লালিত করেছেন, পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে সংগ্রহ করেছেন এমন চাদর, কার্পেট সহ সুতোর কাজ।
সেই মানুষটিকে মৃত্যুর পর সম্মান জানানোর জন্য এমন অভিনব উদ্যোগ যে নেওয়া যেতে পারে তা যেমন অবাক করা তেমনই প্রশংসনীয়। রাশিয়ার এক সময়ের বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী রুডলফ নুরেয়েভ রাশিয়ার নিজস্ব নৃত্যশৈলী ব্যালেকে বিশ্বের কোণায় কোণায় পৌঁছে দিয়েছেন।
নুরেয়েভ যদিও রাশিয়ার সেরা পুরুষ ব্যালে ডান্সার ছিলেন, তবে রাশিয়ার সরকারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ক্রমশ তলানিতে ঠেকছিল। রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবি-র নুরেয়েভের ওপর নজর ছিল। ১৯৬২ সালে রাশিয়া ছেড়ে তিনি অস্ট্রিয়ার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন।
তবে জীবনের শেষের দিকে এসে নুরেয়েভ পাকাপাকিভাবে ফ্রান্সে থাকা শুরু করেন। এই ফ্রান্সেই তাঁর প্রাণ কাড়ে মারণ এইচআইভি। ১৯৯৩ সালে ফ্রান্সেই তাঁর মৃত্যু হয়।
ইসলামীয় রীতি মেনে নুরেয়েভকে কবর দেওয়া হয়। প্যারিস শহরের উপকণ্ঠে তাঁকে কবর দেওয়া হয়। সেই কবরকে সাজিয়ে দেওয়া হয় তাঁর শখের কথা মাথায় রেখে।
ইজিও ফ্রিগেরিও নামে এক শিল্পী নুরেয়েভের কবরের ওপর চাদরের মত করে আদপে একটি মোজাইক ডিজাইন করেন। যা দেখে মনে হবে যেন একটি রঙিন চাদর কবরের ওপর বেছানো রয়েছে। কিন্তু ওই চাদর নড়বেও না চড়বেও না। কারণ ওটা চাদর নয়, হুবহু চাদরের আদলে তৈরি একটি মোজাইক শিল্পীকীর্তি।