National

ক্ষুরধার আক্রমণের পর প্রধানমন্ত্রীকে সৌজন্যের আলিঙ্গন রাহুল গান্ধীর

সংসদে আস্থা ভোটের আগে শুক্রবার আলোচনার সময় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এদিন রীতিমত আক্রমণাত্মক ছিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। একজন দক্ষ সাংসদের মতই এদিন একের পর এক প্রসঙ্গ টেনে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর দিকেও ছুঁড়ে দেন একের পর চোখা প্রশ্ন। প্রধানমন্ত্রীকে এদিন মাঝেমধ্যেই রাহুল গান্ধীর মন্তব্যে হাসতে দেখা যায়। বিষয়টি নজর এড়ায়নি রাহুল গান্ধীরও। সংসদে দাঁড়িয়ে বক্তব্যের ফাঁকে তিনি দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী হাসছেন ঠিকই, কিন্তু ভিতরে ভিতরে তিনি নার্ভাস হয়ে পড়েছেন। যা হাসি দিয়ে ঢাকার চেষ্টা করছেন। এদিন অবশ্য রাহুল গান্ধীর বক্তব্যের মাঝে বিজেপি সাংসদরা ক্রমাগত হৈ হট্টগোল চালিয়ে গেছেন। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অনন্ত কুমারের দাবি ছিল রাহুল গান্ধী সংসদের মর্যাদাহানি করছেন। কয়েকবার অধ্যক্ষ সুমিত্রা মহাজন রাহুল গান্ধীকে কারও নাম বলে সমালোচনা করতে মানাও করেন। পাশাপাশি বিজেপি সাংসদদেরও জানান যে তিনি মনে করেন না যা এখনও রাহুল গান্ধী কোনও অসংসদীয় আচরণ বা বক্তব্য পেশ করেছেন। যদিও তাতেও হৈচৈ থামেনি। ফলে রাহুল গান্ধীর বক্তব্য শেষ হওয়ার আগেই দুপুর দেড়টা নাগাদ সংসদ পৌনে ২টো পর্যন্ত মুলতুবি করে দেন অধ্যক্ষ।

এদিন বক্তব্যের শুরু থেকেই আক্রমণের পথে হাঁটেন রাহুল গান্ধী। তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন প্রত্যেক ভারতীয় নাগরিকের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে পড়বে। কোথায়? প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন বছরে ২ কোটি করে চাকরি হবে। কোথায়? রাহুল গান্ধীর দাবি, প্রধানমন্ত্রীর কথার দাম থাকা উচিত। জিএসটি প্রসঙ্গ টেনে রাহুল গান্ধী বলেন, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের সময়েই কংগ্রেস জিএসটি আনার উদ্যোগ নিয়েছিল। যার প্রবল বিরোধিতা করেছিলেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর নিজেই জিএসটি এনেছেন। কিন্তু কংগ্রেস ১টি কর চেয়েছিল। মোদী সরকার জিএসটি ৫ ভাগে ভেঙে দিয়েছে। পেট্রোল ডিজেলকেও জিএসটির আওতাভুক্ত করার দাবি জানান তিনি।


সরাসরি নাম করেই এদিন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের ছেলের ব্যবসা বৃদ্ধি নিয়ে কটাক্ষ করেন রাহুল গান্ধী। পাশাপাশি তাঁর দাবি দেশের হাতে গোনা ধনীদের সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রীর যত মেলামেশা। তাঁদের ঋণ মকুব করে দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীকে এদিন চৌকিদার নয়, ভাগীদার বলে কটাক্ষ করেন রাহুল। পাশাপাশি তাঁর দাবি, মোদী সরকার ধনীদের ঋণ মকুব করতে পারে কিন্তু কৃষকদের ঋণ মকুব করেনা।

এদিন ফ্রান্সের কাছ থেকে রাফাল বিমান কেনা নিয়েও দুর্নীতির অভিযোগ করেন রাহুল গান্ধী। কেন রাফাল চুক্তি অনুযায়ী কত টাকায় বিমান কেনা হচ্ছে তা প্রধানমন্ত্রী জানাতে চাইছেন না তার উত্তর চান তিনি। তাঁর দাবি, দুর্নীতি লুকোতেই দাম লুকিয়ে যাচ্ছে মোদী সরকার। এমনকি এ বিষয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী মিথ্যা বলছেন বলেও সরাসরি অভিযোগ করেন রাহুল গান্ধী। উত্তরে এদিন ভারত সরকারের সঙ্গে হওয়া ২০০৮ সালের একটি চুক্তি সংসদে পেশ করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমন।


এদিন বক্তব্য শেষ করে আচমকাই সকলকে অবাক করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে হাজির হন রাহুল গান্ধী। তাঁকে জড়িয়ে ধরেন। প্রধানমন্ত্রীও হেসে রাহুল গান্ধীকে অভিনন্দন জানান। যা দেখে খুশি হন সকলেই।

(ছবি – সৌজন্যে – লোকসভা টিভি)

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button