অমরনাথ যাত্রা মাঝপথে বন্ধ করা। জম্মু কাশ্মীরে অতি মাত্রায় সেনা মোতায়েন। শ্রীনগরে ১৪৪ ধারা জারি। ওমর আবদুল্লা ও মেহবুবা মুফতিকে গত রাত থেকে গৃহবন্দি করা। একের পর এক পদক্ষেপে একটা বড় কিছু হতে চলেছে বলে মনেই করছিলেন রাজনীতিবিদ থেকে সাধারণ মানুষ সকলেই। হলও তাই। জম্মু কাশ্মীরকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দিয়ে ৩৭০ ধারার প্রত্যাহারের রাস্তায় হাঁটল কেন্দ্র। ৩৭০ প্রত্যাহারের কথা রাজ্যসভায় এদিন জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক আয়োজিত হয়। এদিন শুধু ৩৭০ ধারাই নয়, ৩৫এ ধারাও বাতিল করে কেন্দ্র।
জম্মু কাশ্মীরের এরপর আর আলাদা রাজ্যের মর্যাদাই থাকছে না। এদিন অমিত শাহ বলেন, জম্মু কাশ্মীরকে ২ ভাগে ভেঙে ২টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি করা হবে। জম্মু ও কাশ্মীর একটি আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হবে। যেখানে একটি বিধানসভা থাকবে। লাদাখ হবে অন্য কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। যেখানে বিধানসভা থাকবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এদিন দাবি করেন, লাগাতার সীমান্তপার সন্ত্রাসবাদে লাগাম দিতেই এই পদক্ষেপ। ওখানকার স্থানীয় বাসিন্দারাও তাই চাইছিলেন বলে দাবি করেন অমিত শাহ। কংগ্রেসকে কাঠগড়ায় চাপিয়ে অমিত শাহ বলেন, ৩৭০ ওখানে জারি রাখা হয়েছিল ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতিকে সামনে রেখে।
৩৭০ ধারা অনুযায়ী বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা পেত জম্মু কাশ্মীর। বিশেষত জম্মু কাশ্মীর সরকারের গৃহীত কোনও নীতিতে সিলমোহর দিতে বাধ্য থাকত কেন্দ্র। অনেক ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ জম্মু কাশ্মীরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ছিলনা। এদিন অমিত শাহ ৩৭০-কে নিয়ে আলোচনার জন্যও বিরোধীদের আহ্বান করেন। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু জানান, প্রত্যেক সদস্যকে এই বিষয়ে অবগত করা হয়েছিল। তারপরও অমিত শাহ যতক্ষণ বলেন বা তার পরেও বিরোধীরা হৈচৈ চালিয়ে যান। ৩৭০ প্রত্যাহারের নাগাড়ে বিরোধিতা চালিয়ে যান তাঁরা।
পিডিপি-র ২ সাংসদ প্রতিবাদ জানিয়ে সংবিধানের কপি ছিঁড়ে ফেলায় তাঁদের কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন চেয়ারম্যান। অন্যদিকে ৩৭০ নিয়ে বিজেপি পাশে পায় বিএসপি, টিডিপি, ওয়াইএসআর কংগ্রেস ও বিজু জনতা দলকে। অন্যদিকে কংগ্রেস, তৃণমূল ও অন্য বিরোধী দলের সাংসদরা এদিন প্রবল বিক্ষোভে সামিল হন। কংগ্রেস এই পদক্ষেপকে ভারতীয় সংবিধানের হত্যা বলে ব্যাখ্যা করেছে। ওমর আবদুল্লা বলেন, এই পদক্ষেপ মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা