লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ করানো বিজেপির জন্য কোনও কঠিন কাজ ছিলনা। যথেষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা তাদের লোকসভায় রয়েছে। তাই গত সোমবার লোকসভায় বিলটি পাশও হয়ে যায় সহজেই। কিন্তু রাজ্যসভায় বিলটি পাশ করানো সহজ ছিলনা। কারণ সংসদের উচ্চকক্ষে সরকারের চেয়ে এককাট্টা বিরোধীদের শক্তি ছিল বেশি। কিন্তু শর্ত ছিল একটাই। বিরোধীদের এককাট্টাই থাকতে হবে এবং বিলের বিপক্ষে ভোটাভুটিতে ভোটদান করতে হবে। সেখানেই নিঃশব্দে বাজিমাত করল বিজেপি। সদ্য বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে কংগ্রেসের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা শিবসেনা এদিন বিজেপির তরফেই পদক্ষেপ করল। বিলটি নিয়ে ভোটাভুটির সময় শিবসেনা সাংসদরা ভোটাভুটিতে অংশই নিলেন না। ফলে বিজেপির বিল পাশ করাতে অসুবিধা হল না।
এদিন বিলের পক্ষে ভোট পড়ে ১২৫টি। বিপক্ষে ভোট পড়ে ১০৫টি। ফলে বিলটি সংখ্যাগরিষ্ঠতার নিরিখে পাশ হয়ে যায়। কংগ্রেস সহ বিরোধী দলগুলি বিলটিকে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি তুলেছিল। তৃণমূল বেশ কিছু সংশোধনী চেয়েছিল। কিন্তু এদিন কিছুই গ্রাহ্য হল না। বিলের পক্ষে যেহেতু ভোটাভুটিতেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা হয়ে গেল তাই বিল পাশ হয়ে যায়। এখন বাকি রইল রাষ্ট্রপতির সাক্ষর। যা নিছকই নিয়ম মাত্র। তারপরে বিলই আইনে রূপান্তরিত হবে।
এদিনও রাজ্যসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আশ্বস্ত করার সুরে বলেন, এই দেশের বাসিন্দা কোনও মুসলিমের এই বিল নিয়ে আতঙ্কের কারণ নেই। তাঁরা এই দেশেরই নাগরিক। তাঁরা এখানে সম্মানের সঙ্গে বসবাস করবেন। এদিকে বিলটির বিরোধিতা করে অসমে এদিন বন্ধ পালিত হয়। অনেক জায়গায় ছোটখাটো গণ্ডগোলের খবরও মিলেছে। অসম বলেই নয়, উত্তরপূর্বের সব রাজ্যেই এই বিলের বিপক্ষে জনমত তৈরি হয়েছে। বিক্ষোভ চলছে। পরিস্থিতি উত্তাল। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা