শীতের মরসুমে নরম রোদ গায়ে মেখে চিড়িয়াখানা, ময়দান বা হালফিলের ইকো পার্কে পিকনিকে মাতেন অনেকেই। কেউ আবার চেনা গণ্ডি থেকে একটু দূরে কোথাও পাড়ি দেন। সেই কাছেপিঠে বেড়ানোর জন্য শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার জুড়ি নেই। নয় নয় করে দিন দশেক ধরে চলে বিকিকিনি। তার ফাঁকে ফাঁকে পর্যটকরা মজে যান লোকশিল্পীদের বাহারি অনুষ্ঠানে। কিন্তু পরিবেশ দূষণ রোখার জন্য এবার থেকে ৬ দিনের জন্য বসবে এই মেলা। এমনই নির্দেশ দিল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। ৩ সদস্যের তদারকি কমিটির নজরদারিও চলবে মেলার উপর।
১৮৪৩ সাল। কুড়ি জন অনুগামীকে নিয়ে ব্রাহ্মধর্ম গ্রহণ করেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। বাংলা ক্যালেন্ডারে দিনটা ছিল ৭ পৌষ। ১৮৯৪ সালে ব্রাহ্ম মন্দির প্রতিষ্ঠার ৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে মন্দিরের উল্টোদিকের মাঠে ৭ পৌষ ছোট করে শুরু হয় পৌষমেলা। এরপর মেলা জনপ্রিয়তা পেলে জায়গার অভাব দেখা দেয়। মেলা উঠে আসে পূর্বপল্লির মাঠে।
কালের বিবর্তনে সেদিনের গ্রাম্য পৌষ মেলা আজ পরিণত হয়েছে শহুরে বাণিজ্য উৎসবে। পরিবেশপ্রেমী ও স্থানীয় প্রবীণ আবাসিকদের অভিযোগ, মেলার কারণে ভয়ংকরভাবে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। প্রচুর লোক সমাগমের জন্য দেখা দেয় জলসংকট। পুরো এলাকা ধুলোয় ভরে ওঠে। জল ঢেলেও পায়ে পায়ে ওঠা ধুলোর হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যায় না। তাই মেলার সময়সীমা কমিয়ে ৩ দিন করার দাবি জানান তাঁরা। এ নিয়ে তাঁরা গ্রিন ট্রাইব্যুনালের দ্বারস্থ হন। তাঁদের সেই আবেদনে সাড়া দিল ট্রাইব্যুনাল। মেলা বেঁধে দিল ৬ দিনে।