বাংলার সংস্কৃতি জগতে ফের করোনার থাবা
বাংলা সংস্কৃতি জগতে ফের শোকের ছায়া। চলে গেলেন বিশিষ্ট বাচিকশিল্পী আবৃত্তিকার প্রদীপ ঘোষ। করোনা প্রাণ কাড়ল তাঁর।
কলকাতা : করোনায় বাংলায় আরও অনেক মৃত্যুর ভিড়ে অংশ নিলেন বাচিক শিল্পী প্রদীপ ঘোষ। কাজী সব্যসাচীর পর প্রদীপ ঘোষের উত্থান বাংলার আবৃত্তি ক্ষেত্রকে অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছিল। তিনি নিজে হয়ে উঠেছিলেন এক কিংবদন্তী। সেই প্রদীপ ঘোষ চলে গেলেন। তাঁর প্রাণ কাড়ল করোনা।
হাল্কা জ্বর একটা ছিল। এই পর্যন্তই। এর বেশি কোনও করোনা উপসর্গ তাঁর মধ্যে দেখা যায়নি। কিন্তু করোনা পজিটিভ ছিলেন। সেই করোনাই অবশেষে কেড়ে নিল প্রাণ। উপসর্গহীন একটা মানুষেরও প্রাণ করোনা কেড়ে নিচ্ছে এমনটা কিছুটা অবাক করছে সকলকেই।
মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তাঁর মেয়ে পৃথা ঘোষ জানিয়েছেন আগের রাতেও তাঁর বাবার সঙ্গে কথা হয়েছিল। তাঁর গলায় একটা হতাশা ছিল। কিন্তু তিনি জানিয়েছিলেন তিনি একদম ঠিক আছেন। আর শুক্রবার সকালেই তাঁর মৃত্যু হল।
যোধপুর পার্কের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন প্রদীপবাবু। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পরার পরই বাংলার সংস্কৃতি মহলে শোকের ছায়া নেমে আসে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রদীপ ঘোষের মৃত্যুতে গভীর শোক ব্যক্ত করেছেন। ট্যুইট করে মুখ্যমন্ত্রী শোক ব্যক্ত করেন।
মুখ্যমন্ত্রী জানান একজন প্রথিতযশা বাচিকশিল্পী তথা আবৃত্তিকার ছিলেন প্রদীপ ঘোষ। তাঁর পরিবারের প্রতিও সমবেদনা ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী।
৬০-এর দশকে একজন আবৃত্তিকার হিসাবে উত্থান হয় প্রদীপ ঘোষের। নানা ধরনের কবিতা পাঠেই তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। তাঁর নিজস্ব একটা ভঙ্গিমা ছিল। প্রতিটি শব্দ এক অনুরণন নিয়ে প্রতিটি শ্রোতার কাছে পৌঁছত। এই ভঙ্গিমা একমাত্র প্রদীপ ঘোষের আবৃত্তিতেই শোনা গেছে।
দীর্ঘদিন বাংলার আবৃত্তি দুনিয়ার সিংহাসন ছিল তাঁর দখলে। শুধু বাংলা বলেই নয়, সারা বিশ্বেই তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। আবৃত্তি দুনিয়ায় তিনি ছিলেন এক অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র। যাঁর প্রয়াণ বাংলার আবৃত্তি দুনিয়ার জন্য এক বড় ক্ষতি। এক বিরাট শূন্যস্থান তৈরি করে চলে গেলেন আবৃত্তিকার ও বাচিকশিল্পী প্রদীপ ঘোষ।